গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় ফাটল আরও চওড়া হল। অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) বিরোধী জোট থেকে কংগ্রেসকে বহিষ্কার করার দাবি তুলেছে। ইতিমধ্যেই জোটের সহযোগী দলগুলির কাছে এ বিষয়ে বার্তা পাঠাতে শুরু করেছে কেজরীর দল।
দিল্লির কংগ্রেস নেতা তথা এআইসিসির কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন বুধবার কেজরীওয়ালকে ‘ফর্জিওয়াল’ (জালিয়াত) বলেছিলেন। দলের তরফে ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করে গত এক দশকে আপের শাসনে দিল্লি দুর্নীতি এবং অনুন্নয়নের শিকার হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে মাকেন বলেছিলেন, ‘‘কেজরীওয়ালের কোনও মতাদর্শ নেই। তিনি রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপির ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, সিএএ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করেছেন।’’ তারই ‘জবাবে’ আপ নেতৃত্বের এই পদক্ষেপ বলে প্রকাশিত খবরে দাবি।
যে লোকপাল আন্দোলন করে কেজরীর রাজনৈতিক উত্থান, সেই জনলোকপাল কেন আপ শাসিত দিল্লি এবং পঞ্জাবে গঠন করা হয়নি, সে প্রশ্নও তোলেন মাকেন। ইতিমধ্যেই কেজরীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ সন্দীপ দীক্ষিতকে প্রার্থী করেছে। ফলে দু’দলের টানাপড়েন তীব্র হয়েছে। সাত মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে জোট বেঁধে লড়েছিল কংগ্রেস এবং আপ। কিন্তু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির সাতটি আসনেই বিজেপি জিতেছিল। তার পরেই ‘ইন্ডিয়া’র দুই সহযোগীর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। দিল্লির পড়শি হরিয়ানায় লোকসভা ভোটে জোট বেঁধে লড়লেও সেপ্টেম্বরের বিধানসভা ভোটে দু’দল আলাদা ভাবে লড়েছিল।
সংসদের সদ্যসমাপ্ত শীতকালীন অধিবেশনে ‘ইন্ডিয়া’য় কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সাংসদদের তোলা প্রশ্নে সায় দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-ও। সংসদ চত্বরে আদানিদের ‘ঘুষকাণ্ডের’ প্রতিবাদে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে বিক্ষোভে দেখা যায়নি ‘ইন্ডিয়া’র ‘মেজো’ এবং ‘সেজো’ শরিককে। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ, এনসিপি(এস) সভাপতি শরদ পওয়ার, শিবসেনা (উদ্ধব)-এর আদিত্য ঠাকরের মতো বিরোধী নেতারা এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো ‘ইন্ডিয়া’র বাইরের দলও বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে মমতাকে তুলে ধরার পক্ষে সওয়াল করেছেন। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা বলেছেন, বিরোধী মঞ্চের নেতৃত্বের দাবি জানাতে পারেন মমতা। এ বার সরাসরি ‘ইন্ডিয়া’ অন্যতম শরিক আপ ময়দানে নামল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ফলে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের ভবিষ্যৎ নিয়েই রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে।