রাজু অহলুওয়ালিয়া। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতার বিরুদ্ধে দাদাগিরি ও দখলদারির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে নামল আসানসোল গ্রামের আগুড়ি সম্প্রদায়ের প্রায় শতাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডের সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সমস্যার সমাধান করতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। অবশেষে পুরনিগম ও পুলিশের পদক্ষেপে হল সুরাহা।
অভিযোগ, আসানসোল পুরনিগম থেকে নেওয়া দোকানঘর দখল করে নিয়েছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের আসানসোল ব্লক সভাপতি রাজু অহলুওয়ালিয়া। সকাল ১১টা থেকে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হটন রোড মোড়ে আগুড়ি সম্প্রদায়ের প্রায় চার-পাঁচশো জন বাসিন্দা জমায়েত করেন। জানা গিয়েছে, আগে থেকেই পুরনিগম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আসানসোল দক্ষিণ থানাকে সঙ্গে নিয়ে দখল করা ঘরের তালা ভেঙে ওই ঘর টেন্ডারে পাওয়া তন্দ্রা রায়কে ফিরিয়ে দেওয়ার। সেই মত আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন পুরনিগমের আধিকারিকেরা।
তন্দ্রার দাদা নিত্যানন্দ রায় বলেন, ‘‘২০১৬ সালে টেন্ডারে পাওয়া আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডের সামনের ওই জায়গা ৭,২১,৫০০ টাকা জমা দিয়ে পেয়েছিল তন্দ্রা। তিন দিন আগে রাজু সেই ঘরে তালা মেরে দেন। এর পরে পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুরনিগমের আধিকারিকদের ও আসানসোল দক্ষিণ থানায় বিষয়টি জানান। সেই মতো বৃহস্পতিবার পুরনিগমের আধিকারিকেরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তালা ভেঙে সেই ঘর পুনরায় তন্দ্রাকে দিয়ে দেন।’’
পুরনিগম ও থানার পদক্ষেপের সময় উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হওয়ায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এই প্রসঙ্গে রাজু বলেন, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারির দুর্নীতি করে এই দোকান হস্তান্তর হয়েছিল, তাই আমরা চাইছিলাম পুরনিগম এটা নিয়ে তদন্ত করুক কিন্তু তদন্ত না করে মেয়র এদিন পুরনিগমের আধিকারিকদের পাঠিয়ে তালা খুলিয়ে দিলেন। তিনি এই কাজ ঠিক করেননি।’’ অবশ্য, নিজে তালা লাগানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজু। তিনি বলেন, ‘‘তালা লাগিয়ে ইউনিয়ন অফিস করার যে অভিযোগ তা পুরোপুরি মিথ্যা।’’ আরও বলেন, ‘‘ আসানসোলে অনেকগুলি ইউনিয়ন অফিস আছে। ইউনিয়ন অফিস করার জন্য তালা মারতে হবে না।’’
আসানসোলের মেয়র বিধান বলেন, “পুরনিগমের থেকে দোকান ঘর পেয়েছিলেন তন্দ্রা। তিনি এসে দখলদারির অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আজ পুরনিগমের আধিকারিক ও পুলিশরা গিয়ে সেই দোকান ঘর খোলার জন্য যাবতীয় আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন।’’ বলেন, যে তালা দিয়েছিল সে কোনও নেতা কি না জানি না। সে কে তাও আমাদের জানা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন কোনও অন্যায় কাজ করা যাবে না।
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে দখলের রাজনীতি করছে। দোকানঘর, লোকের বাড়ি, জমি থেকে মহিলা— সবই দখল করছে।’’