দিনে কতগুলি খেজুর খেতে পারবেন? ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি দিন সকালে ভেজানো বাদামের সঙ্গে কয়েকটি খেজুর খান। শক্তিবর্ধক হিসাবে ছোট থেকেই খেজুরের কথা শুনে আসছেন। অন্তঃসত্ত্বা কিংবা নতুন মায়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারে এই শুকনো ফল। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু আয়রন নয়। এতে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম আছে। ফাইবারের জোগানও যথেষ্ট। তাই এই ফল ডায়েটে রাখতে পারলে শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির ঘাটতি সহজেই পূরণ হয়।
তবে উপকার মিলবে বলে মুঠো মুঠো খেজুর খেয়ে ফেললে হিতে বিপরীত হতে পারে। যে হেতু খেজুর মিষ্টিজাতীয় ফল, তাই বেশি খেলে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। উপকার পেতে গেলে রোজ মাত্র তিনটি খেজুর খাওয়াই যথেষ্ট।
রোজ তিনটি খেজুর খেলে শরীরে কী কী উপকার হতে পারে?
১) পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ
ভিটামিন এবং বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ খেজুর। পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং ফাইবারের মতো উপাদান রয়েছে এই ফলে। ‘জার্নাল অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, খেজুরে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। তা ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে কোষের ক্ষয়ক্ষতি রুখে দিতে পারে।
২) হজমে সহায়ক
খেজুর হজমশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি খেজুর খেয়ে নেওয়া যায়, তা হলে সারা দিন যা-ই খান না কেন, খুব একটা হজমের সমস্যা হবে না। খেজুরের মধ্যে রয়েছে ফাইবার। ‘জার্নাল অফ নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলছে, খেজুরে প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ রয়েছে। তাই নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়।
৩) হাড় মজবুত করে
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয় হওয়া স্বাভাবিক। তাই পুষ্টিবিদেরা ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই সমস্ত উপাদান রয়েছে খেজুরে। যা হাড়ের ক্ষয় রুখে দিয়ে তা মজবুত করতে সাহায্য করে। ‘জার্নাল অফ এথনোফার্মাকোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, নিয়মিত খেজুর খেলে অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৪) হার্ট ভাল রাখে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে না। ফলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খানিকটা হলেও এড়িয়ে চলা যায়। ‘জার্নাল অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, খেজুরের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের অক্সিডেশন প্রতিরোধ করতে পারে।
৫) মস্তিষ্কের জন্য ভাল
খেজুরের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম। স্নায়ুতন্ত্রের কর্মকাণ্ড সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে এই খনিজটির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মস্তিষ্কের স্নায়ু এবং স্মৃতিশক্তি দুই-ই ভাল রাখতে সাহায্য করে খেজুর। ‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, খেজুরের মতো পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার স্নায়ুর বয়সজনিত সমস্যাগুলিও রুখে দিতে পারে।