Smartphone Addiction

ঘুম চোখ খুলেই ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করেন! শরীর ও মনের কী কী ক্ষতি হয়?

ঘুম থেকে উঠে মোবাইলের ব্যবহার মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে। চোখের ক্ষতি তো হচ্ছেই, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি, অস্থিরতা বহু গুণে বেড়ে যাচ্ছে। মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা বাসা বাঁধছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪২
Checking your phone first thing in the morning may be harming your mental and physical health

ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস কতটা ক্ষতিকর জানেন? প্রতীকী ছবি।

সকালে চোখ খুলেই বালিশের পাশে রাখা মুঠোফোনটিকে হাতে তুলে নেন? মোবাইল ডেটা অন করলেই আপনার ফোনে একে একে ঢুকতে থাকে হোয়াট্‌সঅ্যাপ, অফিসের মেল, সমাজমাধ্যমের নোটিফিকেশন। একটির পর একটি অ্যাপে স্ক্রল করতে থাকেন। সেই সঙ্গে গুগ্‌লে জরুরি জিনিস খোঁজাখুঁজিও চলে। শপিং সাইটগুলিতে নতুন কী আপডেট এল তা-ও জানার জন্য কৌতুহল থাকে। অর্থাৎ, সকালে ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ফোনের নীল রশ্মি আপনার চোখের দফারফা করে দেয়। এর প্রভাব যে কত সুদূরপ্রসারী, তা বুঝতেও পারেন না বেশির ভাগ মানুষই। চোখের ক্ষতি কেবল নয়, সকাল সকাল মোবাইল ঘাঁটার এই অভ্যাস শরীর ও মনের উপরেও প্রভাব বিস্তার করে।

Advertisement

সকালে উঠে মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস কী কী ক্ষতি করে?

মানসিক চাপ বাড়বে

মানসিক চাপ মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়। সমাজমাধ্যমের পাতায় ক্রমাগত আসতে থাকা ছবি, ভিডিয়ো বা ব্যক্তিগত বার্তালাপের ধারাবাহিক প্রবাহ মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ অনেক বেড়ে যাবে। শরীরের পাশাপাশি মানসিক ক্লান্তিও বাড়বে।

ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে

স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ফোনের নীল আলো মস্তিষ্কে ‘মেলাটোনিন’ নামক হরমোনের নিঃসরণে বাধা দেয়। এই হরমোন ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বেশি মোবাইল ঘাঁটলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেবে। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা এতটাই বেড়ে যাবে যে, অনিদ্রাজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কাজে মন বসবে না

সকাল সকাল মোবাইলে ব্যস্ত থাকলে গোটা দিনের সমস্ত কাজেই ব্যাঘাত ঘটবে। সবচেয়ে বড় কথা হল, মনোযোগ তলানিতে এসে ঠেকবে। এর পর যখন কাজের জায়গায় যাবেন, তখন কাজে উৎসাহও কমবে। সমাজমাধ্যমে নানা নেতিবাচক মন্তব্য বা সমালোচনা এতটাই প্রভাব ফেলবে মস্তিষ্কে, যে অস্থিরতা বহু গুণে বেড়ে যাবে। কোনও একটি কাজ মন দিয়ে করতেই পারবেন না। রোজের কাজে একাগ্রতাও কমবে।

চোখের ক্ষতি

চোখের ব‍্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এই অভ‍্যাসের ফলে ‘ড্রাই আইজ়’-এর সমস‍্যা ক্রমশ বাড়ছে। ছোট থেকে বড়, সকলেই এই রোগের শিকার। অভ‍্যাসে রাশ টানা ছাড়া এই সমস‍্যা প্রতিরোধের কোনও উপায় নেই। মোবাইলের ব‍্যবহার কমাতে হবে। তা হলেই চোখ সুরক্ষিত থাকবে।

বাস্তব জগতের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্নতা

ঘুম চোখ খুলেই সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ রাখলে মনের অস্থিরতা বাড়তে বাধ্য। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, সমাজমাধ্যমের নেশাকে ‘আচরণগত আসক্তি’ বলা হয়। দেখা গিয়েছে, যাঁরা বেশি সময় সমাজমাধ্যমে কাটান, তাঁরা আশপাশের সম্পর্কগুলিকে তেমন ভাবে গুরুত্ব দিতে চান না। এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তরুণ প্রজন্মে, বিশেষ করে বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের। ভার্চুয়াল বন্ধুর দামি গাড়ি বা সাজানো বাড়ির ছবি মনে ঈর্ষা জাগায়, স্নায়ুজনিত উত্তেজনাও তৈরি করে। অন্যের সঙ্গে তুলনা টানতে টানতে কাছের সম্পর্কগুলি অনেক দূরে চলে যায়।

আরও পড়ুন
Advertisement