কী ভাবে করবেন কপোতাসন? চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
সারা বছর হজমের সমস্যায় ভোগেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। কখনও একটু বেশি খেয়ে ফেললে কিংবা তেল-মশলার পরিমাণ সামান্য এ দিক-ও দিক হলেই গ্যাস, অম্বল, চোঁয়া ঢেকুর উঠতে শুরু করে। তাই খাওয়াদাওয়া সেরেই হজমে সহায়ক মুখশুদ্ধি খেয়ে নেন। তাতে কাজ না হলে শেষে ওষুধই ভরসা!
তবে চিকিৎসকদের মত, খুব বেশি ওষুধ- নির্ভর হয়ে পড়লে একটা সময়ের পর শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়তে পারে। এ ছাড়াও ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তো কম নয়। তাই ওষুধ-নির্ভর না হয়ে স্বাভাবিক উপায়ে হজমশক্তি বৃদ্ধির উপর নজর দিতে হবে। যোগ প্রশিক্ষকেরা অবশ্য বলছেন, এ ক্ষেত্রে যোগাসনের উপর ভরসা রাখতে পারেন। নিয়মিত কপোতাসন অভ্যাস করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
সংস্কৃতে ‘কপোত’ শব্দের অর্থ হল পায়রা। অর্থাৎ, এই আসন করার সময়ে দেহের ভঙ্গি অনেকটা পায়রার মতো হয়। এই আসন করা খুব সহজ নয়। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সমস্যা হবে না। তবে একেবারে শুরুতে এই আসন করতে গেলে শরীরের কোথাও চোট লেগে যেতে পারে।
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের উপর হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে বসুন।
· এ বার প্রথমে ডান হাঁটু ভাঁজ করে বাঁ হাতের পাশ দিয়ে প্রসারিত করুন। বাঁ পা ঠেলে দিন পিছনের দিকে।
· দুই হাতের তালু মাটিতে রাখুন। দেহের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করুন। ঘাড়, পিঠ, কোমর থাকবে টান টান। এই অবস্থান ধরে রাখুন ১০ সেকেন্ড। শ্বাস-প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে।
· এ বার বাঁ হাঁটু উল্টো দিকে ভাঁজ করে কোমরের কাছাকাছি টেনে আনতে চেষ্টা করুন।
· এ বার দু’হাত মাটি থেকে তুলে নিয়ে যেতে হবে মাথার পিছন দিকে। দু’টি হাতের আঙুল একে অপরের সঙ্গে শক্ত করে ধরা থাকবে।
· বাঁ পায়ের পাতা আর ডান হাতের কনুই একে অপরকে স্পর্শ করে থাকবে। এই অবস্থানে থাকতে হবে ১০ সেকেন্ড।
· তার পর আবার প্রথম পর্যায়ে ফিরে যেতে হবে। কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে একই ভাবে অন্য পায়ে অভ্যাস করতে হবে কপোতাসন।
কেন করবেন?
কোমরের নীচের অংশ, অর্থাৎ নিতম্বের পেশি নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। সায়াটিকার ব্যথায় আরাম মেলে। পিঠ, কোমর, কাঁধের ব্যথারও উপশম হয়। মানসিক চাপ, উত্তেজনা, অবসাদ প্রশমিত করে। শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে এই আসন।
সতর্কতা:
হাঁটু, কোমর, কিংবা নিতম্বে কোনও রকম চোট-আঘাত লেগে থাকলে এই আসন অভ্যাস করা যাবে না। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কপোতাসন অভ্যাস করা নিষিদ্ধ।