মন শান্ত হবে, একাগ্রতা বাড়বে গরুড়াসন করলে। চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
মাঝেমধ্যেই মন অন্যত্র পাড়ি দিচ্ছে। কিছুতেই তাকে এক জায়গায় ধরে রাখা যাচ্ছে না। আসলে মনের নিয়ন্ত্রণ সব সময়ে নিজের হাতে থাকে না। পড়াশোনা হোক বা রান্না, মন না দিলে কোনও কাজই ‘মনের মতো’ হয় না। শিশুরা তো এমনিতেই ছটফটে। তাদের মনকে আয়ত্তে আনা বেশ ঝক্কির।
প্রাপ্তবয়স্কেরা হাতে-পায়ে ঠান্ডা হয়েও মনকে একটি বিন্দুতে উপনীত করতে পারেন না। ভিতর ভিতর অস্থিরতায় ভোগেন। এই ধরনের সমস্যার নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে। ফোনের প্রতি আসক্তিও অস্থিরতার একটি কারণ হতে পারে। অনেকে হয়তো ধ্যান করার পরামর্শ দেবেন। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, ধ্যানের মাধ্যমে মনকে স্থিত করা সহজ নয়। বদলে গরুড়াসন অভ্যাস করলে উপকার মিলতে পারে।
‘গরুড়’ নামটির সঙ্গে প্রায় সকলেই পরিচিত। পুরাণমতে, বিষ্ণুর বাহন হলেন গরুড়। কাল্পনিক হলেও এই পাখিটির সঙ্গে ইগলের মিল রয়েছে। তাই ইংরেজিতে এই ভঙ্গিকে ‘ইগল পোজ়’-ও বলা হয়।
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। শ্বাস-প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে। দেহের দু’পাশে রাখুন হাত।
· এ বার হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে বাঁ পায়ের ঊরু, ডান পায়ের উপর তুলুন। এমন ভাবে পা রাখতে হবে, যেন দেখে মনে হয়, বাঁ পা, ডান পা-কে পেঁচিয়ে রেখেছে।
· এ বার দু’হাত সামনের দিকে প্রসারিত করে কনুই ভাঁজ করুন। ডান হাতের উপর বাঁ হাত পেঁচিয়ে ধরুন। দু’হাতের তালু থাকবে প্রণামের ভঙ্গিতে।
· লম্বা শ্বাস নিয়ে এই ভঙ্গি ধরে রাখতে হবে অন্তত ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড। তার পর শ্বাস ছেড়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে।
· ঠিক একই রকম ভাবে ডান হাত এবং ডান পায়েও এই ভঙ্গি অভ্যাস করুন। দুই পা, হাত বদলিয়ে অন্তত বার তিনেক এই আসন অভ্যাস করতে হবে।
কেন করবেন?
মনঃসংযোগ বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি মন শান্ত রাখতেও সাহায্য করে এই আসন। গোড়ালি, পায়ের কাফ মাস্লের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। ঘাড়, কাঁধের ব্যথায় আরাম মেলে। পেশিতে টান ধরার প্রবণতা কমে। কোষ্ঠকাঠিন্য, হজম সংক্রান্ত সমস্যা নিরাময় করে। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, সাইটিকা এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সংক্রান্ত ব্যথাবেদনাও বশে রাখে এই আসন।
সতর্কতা:
কারও যদি হাঁটু, গোড়ালি কিংবা কনুইয়ে চোট লেগে থাকে তা হলে এই আসন করার আগে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বডি ব্যালান্সের সমস্যা থাকলে এই আসন করা নিষিদ্ধ।