প্রতীক গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত।
গত ৮ বছর ধরে অভিনেতা প্রতীক গান্ধী মঞ্চে ‘মোহন না মসলো’ (মহাত্মা গান্ধীর জীবনকেন্দ্রিক) নাটকে অভিনয় করছেন। তাঁর অভিনয় বহুল প্রশংসিতও হয়েছে। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবে আমরা আশা করতে পারি, হনসল মেহেতার নতুন সিরিজ় ‘গান্ধী’ তে প্রতীক ভালই কাজ করবেন।
এই মুহূর্তে প্রতীক লন্ডনে ‘গান্ধী’ সিরিজ়ের শুটিং করছেন, বিপরীতে স্ত্রী ভামিনী ওঝা, যিনি গান্ধীর স্ত্রী কস্তুরবার ভূমিকায় অভিনয় করছেন একই সিরিজ়ে। গান্ধীর এই ভূমিকার জন্য প্রতীককে ওজন কমাতে হয়েছে, তাঁর নতুন রূপ নিয়ে প্রতীক জানালেন,”‘গান্ধী’ সিরিজ়ের জন্য আমি ওজন কমাচ্ছি। তারই ফলস্বরূপ এই নতুন চেহারা। ডায়েটও বদলেছেন প্রতীক। বললেন, “পরিষ্কার খাবারের একটা ভাল দিক তো এটাই। নিয়ম মেনে জীবনযাপন করার সুফল অনেক।”
প্রতীক জানালেন,’শুটিং পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে, কতটা আলাদা, কী আলাদা সেটা সময় বলবে। আমি এই মুহূর্তে শুধু এইটুকু বলতে চাই আমি গান্ধীকে কোনও রকম ভাবে বিচার না করেই এই সিরিজ়ে কাজ করছি। গান্ধীকে আমি নায়ক বা খলনায়ক হিসেবে কোনও দিন দেখিনি। গান্ধীর শিক্ষণীয় বিষয়গুলো এই সিরিজ় তুলে ধরবে।’
স্ত্রী ভামিনী ওঝা, যাঁকে ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’-এর মত জনপ্রিয় টিভি শো-তে দেখা গিয়েছে, তাঁকে গান্ধীর স্ত্রী কস্তুরবার ভূমিকায় দেখা যাবে। মঞ্চে আগে কাজ করলেও এই প্রথম দু’জনে ক্যামেরার সামনে অভিনয় করবেন। প্রতীক বললেন, ‘‘থিয়েটারের মাধ্যমে আমরা একে-অপরকে চিনি। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, আমরা দু’জনের কাজ সম্পর্কে অবগত, তাই একে-অপরের বিকাশেও আমাদের অবদান থাকে। স্বামী-স্ত্রীর আগে আমরা কিন্তু খুব ভাল বন্ধু। তাই একে-অপরকে আমরা সমালোচনাও করে থাকি।’
কিন্তু সম্পর্কের মধ্যে প্রতীক কখনও কোনও প্রতিযোগিতা বা নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন? অভিনেতা বললেন, ‘‘নিরাপত্তার অভাব কোনও দিন বোধ করিনি। করবও না মনে হয়। আজ আমি যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি, তাতে ভামিনীর অবদান অনেক। আমি যখন চাকরি করতাম, তখন আমি থিয়েটার নিয়েও খুব ব্যস্ত থাকতাম, ওকে একদম সময় দিতে পারতাম না। আমার সাফল্যের পিছনে ভামিনীর অবদান প্রচুর, সেটা আমি কোনও দিনই অস্বীকার করতে পারব না। সপ্তাহান্তে আমার সব সময় নাটকের মহড়া থাকত, কিন্তু ভামিনী কখনও অনুযোগ করেনি। ভামিনী কট্টর মাড়োয়ারি পরিবারের মেয়ে। আমাদের (গুজরাতি) থেকেও বেশি রক্ষণশীল। ২০১৪ সালে আমাদের একটি কন্যাসন্তান হয়। তার পর ও কাজ থেকে একটা লম্বা বিরতি নেয়। ভামিনীকে আমি অনেক দিন ধরেই বলছিলাম কাজের মধ্যে ফিরতে। আমি আমার পরিবারের সব মহিলাকে সব সময় কর্মরত দেখেছি। তাই ওর কাজ করাটা আমার কাছে খুব স্বাভাবিক। আমরা দু’জনে খুব স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের মানুষ, আর আমাদের বৈবাহিক জীবনের দু’টি প্রধান স্তম্ভ হল পারস্পরিক সম্মান আর ভালবাসা।’’
প্রতীকের মঞ্চে অভিজ্ঞতা গভীর এবং সেই কারণে তিনি থিয়েটার কোনও দিন ছাড়েননি। বললেন , ‘‘থিয়েটার আমার কাছে ঠিক জিমে যাওয়ার মত, এখানে সব কিছু অভ্যাস করা যায়। মঞ্চে আমি যা শিখেছি, তা কোনও দিন ভোলার নয়। ছবিতে ৪৫-৫০ দিনের জন্য যখন কাজ করি সেটা একদম একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মত, সেখানে চিন্তাভাবনার সময় থাকে না। থিয়েটার আপনাকে সব কিছুর জন্য প্রস্তুত করে দেয়।’’
স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে প্রতীক প্রথম বার ফ্যান্সি ড্রেস প্রতিযোগিতাতেও গান্ধী সেজেছিলেন, তার পর ২০১৬ থেকে ‘মোহন না মসালো’-তে মঞ্চে গান্ধীকে দর্শকের সামনে তুলে ধরেছেন। প্রতীক অবগত, মঞ্চ এবং সিরিজের ‘গান্ধী’র মধ্যে ফারাক অনেক।
এই মুহূর্তে প্রতীক এবং ভামিনী ক্যামেরার সামনে এবং পিছনে বেশ অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন। জুলাইয়ে গান্ধী’ সিরিজ়ের প্রথম সিজ়নের কাজ শেষ হবে, ২০২৫-এর প্রথম দিকে সিরিজ়টি মুক্তি পাওয়ার কথা।