Dilkhush Movie Review

ভালবাসার সন্ধানে চার জুটি, কেমন হল ‘দিলখুশ’? জানাচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন

এই ধরনের ছবির ক্ষেত্রে তর্ক ওঠে, কোন জুটির গল্পটা বেশি ভাল। চরিত্রগুলির সমস্যাগত মিল থাকলেও তারা বাস্তব থেকে উঠে এসেছে।

Advertisement
অভিনন্দন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১১
চরিত্রগুলির পরস্পরের মধ্যে যোগসূত্রও রয়েছে। তবে তা জানতে ছবিটি দেখে ফেলাই ভাল।

চরিত্রগুলির পরস্পরের মধ্যে যোগসূত্রও রয়েছে। তবে তা জানতে ছবিটি দেখে ফেলাই ভাল। ছবি: সংগৃহীত।

ব্যস্ত জীবনে সময়ের সঙ্গে ছুটে চলা মানুষ। সমাজমাধ্যমে লাইক আর কমেন্টের ভিড়ে তাদের মধ্যে একটাই মিল। তারা যেন প্রত্যেকেই ভীষণ একা। আটটি চরিত্র। কারও প্রিয় মানুষটি ছেড়ে গিয়েছে, কেউ বা জীবন-সায়াহ্নেও একজন বন্ধুর সন্ধানে। নগরসভ্যতার জাঁতাকলে আটকে এক ডেটিং অ্যাপের কেরামতিতেই মানুষগুলির কাছের জনকে খুঁজে পাওয়া। সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দিলখুশ’ সব বয়সের দর্শকের কাছেই বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ভালবাসার সন্ধান।

ছবির কাস্টিং নজরকাড়া। ডেথ সার্টিফিকেট লেখা ডাক্তার অমূল্যরতনের (পরান বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে একাকিত্বে ভুগতে থাকা কমলিকা দেবীর (অনসূয়া মজুমদার) সম্পর্ক। হোম ডেলিভারির মালকিন ডলি (অপরাজিতা আঢ্য) ভাল কৌতুকাভিনেত্রী। সে স্বপ্ন বোনে যাত্রাশিল্পী শক্তির (খরাজ মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে। ব্যবসায়ী পরিবারে দম বন্ধ হয়ে আসা পুষ্পিতা (মধুমিতা সরকার) আবার মুক্তি খোঁজে সাইবার ক্যাফে চালানো ঋষির (সোহম মজুমদার) কাছে। পিএইচডির ছাত্র বোধির (উজান চট্টোপাধ্যায়) একঘেয়ে জীবনে টাটকা বাতাস আনে সমাজমাধ্যমের জনপ্রিয় প্রভাবী তৃষা (ঐশ্বর্য সেন)। চরিত্রগুলির পরস্পরের মধ্যে যোগসূত্রও রয়েছে। তবে তা জানতে ছবিটি দেখে ফেলাই ভাল।

Advertisement
একাধিক চরিত্রের সমাগমে গল্পের সূত্র মিলিয়ে দেওয়া কঠিন কাজ। রাহুল কাজটা করতে পেরেছেন।

একাধিক চরিত্রের সমাগমে গল্পের সূত্র মিলিয়ে দেওয়া কঠিন কাজ। রাহুল কাজটা করতে পেরেছেন। ছবি: সংগৃহীত।

সাধারণত এই ধরনের ছবির ক্ষেত্রে তর্ক ওঠে, কোন জুটির গল্পটা বেশি ভাল। কারণ ছবিই বলে দিচ্ছে, ‘‘সব প্রেমের গল্প হয় ম্যাজিক, নয় তো ট্র্যাজিক!’’ তাই কাউকে আলাদা করে উল্লেখ করা মানে অন্যকে ছোট করা। চরিত্রগুলির সমস্যাগত মিল থাকলেও তারা বাস্তব থেকে উঠে এসেছে। দর্শকভেদে মানুষ তাদের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন। অভিনয়ে পরান, অনসূয়া, খরাজ, অপরাজিতা যেখানে অভিজ্ঞতায় নজর কেড়েছেন, সেখানে এই প্রজন্মের অভিনেতারাও ছবিতে যোগ্য সঙ্গত করেছেন। মধুমিতা ও সোহম যথাযথ। অনন্যা সেন এবং ঐশ্বর্য সেনের অভিনয়ে টাটকা বাতাস বইছে। আলাদা করে নজর কেড়েছেন উজান। সূত্রধর হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের নেপথ্য উপস্থিতি কাহিনির বাঁধন ধরে রেখেছে।

একাধিক চরিত্রের সমাগমে গল্পের সূত্র মিলিয়ে দেওয়া কঠিন কাজ। রাহুল কাজটা করতে পেরেছেন। তবে অরিত্র সেনগুপ্তর লেখা চিত্রনাট্যে কিছু প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। গল্পে সব চরিত্রের অতীতে সমান আলোকপাত করা হয়নি। ফলে খানিক অসম্পূর্ণতা রয়ে যায়। নীলায়ন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ছবির গানগুলি শুনতে মন্দ নয়। অ্যাপ ও চ্যাটের উপর নির্ভরশীল গল্পে পর্দায় ফুটে ওঠা মেসেজ পপ-আপগুলিতে ভিএফএক্সের কাজ ভাল। মধুরা পালিতের ক্যামেরা যথাযথ।

পরিচালকের শেষ ছবি ‘কিশমিশ’ দর্শকদের পছন্দ হয়েছিল। এ বারেও তিনি ভালবাসাকে অন্য আঙ্গিকে দেখতে চেয়েছেন। কাহিনির মারপ্যাঁচে না ঢুকে সহজ গল্প সহজ ভাবে বলেছেন। এখন এই ছবি দর্শকের ‘দিলখুশ’ করতে পারে কি না, তা সময় বলবে।

আরও পড়ুন
Advertisement