প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলকাতার মহাত্মা গান্ধী রোডে (এমজি রোড) বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক মহিলার। জখম আরও কয়েক জন পথচারী। শুক্রবার হাওড়াগামী একটি মিনিবাস রাস্তা ছেড়ে রেলিং ভেঙে উঠে পড়ে ফুটপাতে। সজোরে ধাক্কা মারে পথচারীদের। জখম অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহিলার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার একটি যাত্রীবোঝাই মিনিবাস শিয়ালদহের দিক থেকে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিল। বড়বাজারে এমজি রোডের উপর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি। ফুটপাতের রেলিংয়ে ধাক্কা মারার অভিঘাতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। ভেঙে যায় বাসের নম্বরপ্লেটও। দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছে এক শিশু। আহতেরা সকলেই একই পরিবারের লোক। আহতদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়।
কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে উঠে পড়ে। ঘাতক বাসটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাসের চালককেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাসের গতি বেশি ছিল, না কি যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে দুর্ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও দুর্ঘটনাস্থল এবং তার আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। জনবহুল এলাকায় নজরদারির অভাব বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, বড়বাজারের মতো এলাকায় বাসের কোনও স্টপেজ নেই। যাত্রীরা প্রায় দৌড়ে বাস থেকে ওঠানামা করেন। সব সময়ই বিপদের সম্ভাবনা থাকে। তার উপর মাঝেমধ্যেই বাসগুলি যাত্রী তোলার জন্য নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করে। ঘটনাস্থলে রয়েছে বড়বাজার থানার পুলিশ।
কলকাতায় বার বার বাস দুর্ঘটনার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। দিন কয়েক আগেই তেলেঙ্গাবাগানে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এক মহিলা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দু’টি বাসের রেষারেষির জেরেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এলাকায় বেপরোয়া গতিতে বাস চললেও ট্র্যাফিক পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ তাঁদের। গত বছর নভেম্বরে সল্টলেকে দুই বাসের রেষারেষিতে আয়ুষ পাইক নামে এক চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। তবে তাতেও কমানো যায়নি বাস রেষারেষির ঘটনা। বাসের রেষারেষি রুখতে কড়া পদক্ষেপও করে সরকার। বিভিন্ন বাসমালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কয়েক দফা নির্দেশিকাও জারি করা হয়। কিন্তু তার পরও বাসচালকদের হুঁশ ফেরেনি, তা শুক্রবারের ঘটনা আরও এক বার প্রমাণ করল।