জিতে গেলেন ঐন্দ্রিলা, ধন্য সব্যসাচীর অধ্যবসায়
জিতে গেলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। ধন্য সব্যসাচী চৌধুরীর অধ্যবসায়! শেষ বারের মতো প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা শর্মাকে নিয়ে বুধবার রাতে কলম ধরলেন ছোট পর্দার ‘বামদেব’।
বরাবরের মতো এ বারেও তিনি ফেসবুকে লিখেছেন ক্যানসারের বিরুদ্ধে ঐন্দ্রিলার লড়াইয়ের কথা। তবে এ বার সেই যুদ্ধ শেষের পথে। চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে অভিনেত্রীর চিকিৎসা। দাঁতে দাঁত চেপে ‘ফাইট ঐন্দ্রিলা ফাইট’, এই মন্ত্র জপতে জপতে লড়েছেন তিনি। এবং অবশেষে ক্যানসার-জয়ী ঐন্দ্রিলা। সেই আনন্দ সব্যসাচী কী করে চেপে রাখেন নিজের মধ্যে? সারা ক্ষণ পাশে থেকে, আগলে রেখে, সেবা করে তিনিও যে লড়াইয়ের রসদ জুগিয়ে গিয়েছেন! আনন্দবাজার অনলাইনকে সব্যসাচী বলেছেন, ‘‘সবাই ওর লড়াই জানতে চান। খবর নেন। তাই ছ’মাস ধরে কলম ধরেছিলাম। এর পিছনে আরও একটি কারণ আছে। ঐন্দ্রিলা বুঝুক, ওকে কত মানুষ চেনেন, জানেন, ভালবাসেন। আমি জানতাম, এই জোরেই ও জিতে ফিরবে। তখনই ঠিক করেছিলাম, যে দিন ওর চিকিৎসা শেষ হবে তার পর থেকে আর ওকে নিয়ে কলম ধরব না।’’
ঠিক তাই করলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ খ্যাত অভিনেতা। একইসঙ্গে জানালেন, ঐন্দ্রিলার লড়াইয়ের বীজ ওর রক্তে। রোগের বীজ জিনঘটিত। ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা অনেকগুলো বছর ভুগেছেন জরায়ু, কোলন ক্যানসারে। সব্যসাচীর লেখা অনুযায়ী, ২০০৭-এ অভিনেত্রীর মায়ের কর্কট রোগ ধরা পড়ে। তার পর দেশে-বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করান তিনি। চিকিৎসকেরা যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন তখনও তিনি দমেননি। পরামর্শ নিয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন। ওষুধ খেয়েছেন। সুস্থ হয়ে হাসিমুখে ঘরে ফিরেছেন।
সব্যসাচীর কথায়, ‘১৪ বছর কেটে গিয়েছে তার পর। ঐন্দ্রিলার মা এখনও চাকরি করেন। সম্পূর্ণ সুস্থ। মেয়ের অসুস্থতায় তাকে দুই হাতে আগলাচ্ছেন!’
তার ফলাফল কী? ঐন্দ্রিলার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কর্কট রোগের আর কোনও কোষ ওর শরীরে অবশিষ্ট নেই। এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা সুস্থ এবং বিপদমুক্ত। পাশাপাশি, ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত কেমোথেরাপি চলবে। শারীরিক অবস্থা জানতে প্রতি তিন মাস অন্তর স্ক্যান করা হবে। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। তাঁরই বেঁধে দেওয়া নিয়মে জীবন যাপন করতে হবে অভিনেত্রীকে।
রোগমুক্ত হতে কতটা ধকল পোহাতে হয়েছে ‘জিয়নকাঠি’র নায়িকাকে? সব্যসাচী জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারে শরীর থেকে বাদ গিয়েছে অর্ধেক ফুসফুস, হৃদপিণ্ডের ছাল বা পেরিকার্ডিয়াম এবং ডায়াফ্রামের একাংশ। অতিরিক্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার, স্টেরয়েড এবং কিছু ওষুধপত্রের কারণে অভিনেত্রীর ওজন বেড়েছে প্রায় ১১ কেজি। তবে ছিপছিপে শরীর হারিয়ে মোটেই ভেঙে পড়েননি ঐন্দ্রিলা। উল্টে তাঁর প্রেমিককে জানিয়েছেন, ধীরেসুস্থে ওজন কমিয়ে একেবারে সুস্থ হয়ে পরের বছর আবার তিনি স্টুডিয়ো পাড়ায় পা রাখবেন। ক্যামেরার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অভিনয় করবেন আগের মতোই।