লকেট চট্টোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে হুগলিতে এ বার ‘তারকা-যুদ্ধ’। তৃণমূলের প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়— অভিনয় জগতে দুই সতীর্থই ভোটযুদ্ধে নেমে প্রচারে ঝড় তুলেছেন। নির্বাচনী প্রচারের চতুর্থ দিনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী লকেটের কাছে ‘হিসাব’ চাইলেন রচনা। মঙ্গলবার চন্দননগরের সভা থেকে লকেটের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গত পাঁচ বছরে কী কী কাজ করেছেন, তার হিসাব দিন। হুগলির মানুষ জানতে চান।’’
রচনা যখন চন্দননগরে তখন পোলবায় প্রচার করছিলেন হুগলির বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী লকেট। রচনার প্রশ্ন কানে যেতেই কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি। ‘প্রার্থী পরিচিতি’র হ্যান্ড বিল দেখিয়ে লকেট জানান, গত পাঁচ বছরে ১৭ কোটি টাকা তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে খরচ হয়েছে। করোনার জন্য দু’বছরে সাংসদ তহবিলের টাকা বরাদ্দ হয়নি। সাংসদ হিসাবে জল, স্বাস্থ্য, পথবাতি, স্কুলের উন্নয়ন, অ্যাম্বুল্যান্স-সহ বিভিন্ন কাজে অর্থ খরচ করেছেন বলেন জানান লকেট। এ ছাড়াও তাঁর দাবি, সাংসদ হিসেবে সাধারণ মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন।
রচনাকে খোঁচা দিয়ে লকেট বলেন, ‘‘এই প্রথম উনি রাজনীতিতে এসেছেন। উনি হয়ত জানেন না যে প্রতি বছর পাঁচ কোটি টাকা করে পাওয়া যায়। এখনও পর্যন্ত ১৭ কোটি টাকা পেয়েছি। আগের কিছু টাকা ছিল। সব মিলিয়ে ১৭ কোটি ৬২ লক্ষ টাকার হিসাব আমার কাছে রয়েছে।’’ বিজেপি প্রার্থীর সংযোজন, ‘‘বিদ্যালয়ের জলের পাম্প, দেওয়াল, ক্লাসঘর, সাইকেল সেট, কম্পিউটার রুম, অডিটোরিয়াম নির্মাণ, অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছে। রাস্তা, ড্রেন, শ্মশানঘাট, জলছত্র তৈরি করা হয়েছে। ১৭৩টি সোলার লাইট দেওয়া হয়েছে।’’
বিদায়ী সাংসদ লকেটের দলে সূত্রে খবর, প্রায় দু’লক্ষ হ্যান্ড বিল ছাপানো হয়েছে। পাঁচ বছরে সাংসদ হিসাবে লকেটের কাজের খতিয়ান মানুষের কাছে তুলে ধরতেই এই প্রয়াস। অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে বার বার অভিযোগ করা হয়, সাংসদ হিসাবে লকেটকে তাঁর এলাকায় দেখতে পান না মানুষ। সাংসদ তহবিলের টাকায় যে কাজ হয়েছে, তারও হিসাব পাওয়া যায়নি। যদিও ছাপানো খতিয়ান তুলে ধরে বিজেপি প্রার্থীর দাবি, তিনি সাংসদ কোটার ১০০ শতাংশই খরচ করেছেন।