দীপালি বিশ্বাস এবং শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
গত জানুয়ারি মাসেই জল্পনা ছড়িয়েছিল। অবশেষে বিজেপি ছাড়লেন গাজলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি জেলা কমিটির সহ-সভানেত্রী দীপালি বিশ্বাস। তৃণমূলে যোগ দিয়ে দীপালির অভিযোগ, ‘‘বিজেপি আমার সঙ্গে বেইমানি করেছে।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিলেন দীপালি। যদিও প্রাক্তন বিধায়কের দলত্যাগে কোনও প্রভাবই পড়বে না বলে দাবি করেছে বিজেপি।
মঙ্গলবার দীপালির সঙ্গে বিজেপি ছাড়েন তাঁর স্বামী রঞ্জিত বিশ্বাস। তিনি লোকসভা নির্বাচনে মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির পর্যবেক্ষক ছিলেন। মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি এবং মালদহ উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন। গাজলে তৃণমূলের একটি নির্বাচনী সভার মধ্যেই তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। আর এই ঘটনার পরেই মালদহের রাজনীতিতে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
দীপালি শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ নেত্রী ছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে গাজল থেকে সিপিএমের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। সে সময় মালদহের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু। ওই বছরই কলকাতায় ২১ জুলাই মঞ্চে শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন দীপালি। আবার ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর, মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় সেই শুভেন্দুর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। যদিও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে দীপালিকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। গত বছর ২৬ জানুয়ারি দীপালিকে উত্তর মালদহের সহ-সভাপতি করে বিজেপি। কিন্তু দীপালি বিজেপিতে ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিলেন। গত মাসে গাজলে শুভেন্দুর সভাতেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার আবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে দীপালি বলেন, ‘‘বড় ভুল করেছিলাম। শুভেন্দু অধিকারী ভুল বুঝিয়ে দলে নিয়ে গিয়েছিল। মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। একটা কথাও রাখেনি।’’ দীপালির সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে আমাকে দলে নিয়েছেন, তাতে আমি তাঁদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি এবং প্ররোচনায় যেন আর কেউ পা না দেন।’’
দীপালির তৃণমূলে যোগদান নিয়ে মালদহের তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, ‘‘২০১৯ সালে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওঁকে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে বিজেপির মিথ্যাচার বুঝতে পেরে সবাই তৃণমুলে এসেছে। বিজেপির ধস নামা শুরু হয়েছে। আগামীতে আরও হবে।’’
তবে দীপালির ‘পদ্মত্যাগ’ নিয়ে গাজলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মণের মন্তব্য, ‘‘কিছু মানুষ স্বার্থসিদ্ধির জন্য দলে এসেছিলেন। স্বার্থসিদ্ধি হয়নি। তাই দল ছাড়লেন। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’’