প্রতীকী ছবি
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি এ বার সিমেস্টার প্রথা। তবে শুধু পাঠ্যক্রম পরিবর্তনই নয়, পাশাপাশি, ‘টিচিং-লার্নিং’ পদ্ধতিকে সময়ের অধীনে বেঁধে দিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বৃহস্পতিবার শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন।
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য নয়া পাঠ্যক্রম প্রকাশ করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বিষয়ভিত্তিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও সরলীকরণের (বাইফারকেটেড) পথে হাঁটল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। চলতি বছর থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হল সিমেস্টার সিস্টেম।
যে সমস্ত পড়ুয়া ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে উঠবে তারা প্রথমে এই সিমেস্টার ভিত্তিক মূল্যায়নের মধ্যে পড়বে। তারাই প্রথম ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। এই ক্ষেত্রে একটাই অ্যাডমিট কার্ড হাতে পাবে পড়ুয়ারা। সুতরাং, দ্বাদশ শ্রেণিতে একই অ্যাডমিট কার্ডে বছরে দু’বার উচ্চ মাধ্যমিক দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। তবে, ব্যবহারিক (প্র্যাক্টিক্যাল) পরীক্ষাগুলির মূল্যায়ন করা হবে বছরের শেষে। শুধু মাত্র থিয়োরি পরীক্ষাগুলিই বছরে দু’বার দিতে হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত পাঠ্যক্রম আজকে অনলাইনে আপলোড করে দেব। ১৩টি ভোকেশনাল সাবজেক্ট ছাড়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা সায়েন্সকে ধরে এই মুহূর্তে উচ্চমাধ্যমিকের বিষয় হল মোট ৬২টি। ১১ বছর আগে উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হয়ে ছিল তাই বিষয়ভিত্তিক রিভিউ ও পরিবর্তন করে যুগোপযোগী পাঠ্যক্রম প্রকাশ করা হয়েছে।’’
পাশাপাশি, ‘টিচিং লার্নিং’ পদ্ধতিকে সময়ের অধীনে বেঁধে দিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। প্রত্যেক বছরের জন্য সমস্ত বিষয়ে মিলিয়ে মোট ২০০ ঘণ্টা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০০ ঘণ্টা হচ্ছে প্রথম সিমেস্টারের জন্য ও দ্বিতীয় সিমেস্টারের জন্য ৮০ ঘণ্টা সময় ধার্য করা হয়েছে। ২০ ঘণ্টা রয়েছে রেমিডিয়াল ক্লাস, টিউটোরিয়াল ক্লাস ও হোম অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে মোট চারটি সিমেস্টারে ভাগ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর মধ্যেও মার্কস পদ্ধতিকেও সরলীকরণ করা হয়েছে। শারীরশিক্ষা, মিউজিক ও ভিজুয়াল আর্টস বাদ দিয়ে যে সমস্ত বিষয় প্র্যাকটিক্যাল ভিত্তিক বিষয় রয়েছে সেখানে মোট ১০০ নম্বরকে ভাগ করা হয়েছে ৭০ ও ৩০ নম্বরে। এর মধ্যে ৭০ নম্বর থাকছে থিয়োরিতে এবং প্র্যাকটিক্যালে থাকছে ৩০ নম্বর। আবার থিয়োরি পেপারের ৭০ নম্বর ভাগ করা হচ্ছে দু’টি ভাগে ৩৫ নম্বর করে। অর্থাৎ প্রথম সিমেস্টারে থাকবে ৩৫ নম্বর থিয়োরি এবং দ্বিতীয় সিমেস্টারে থাকবে ৩৫ নম্বর-সহ প্র্যাকটিক্যালে মূল্যায়নের নম্বর। যেগুলি সম্পূর্ণ ভাবে থিয়োরি বিষয়ে সেগুলি ৮০ ও প্রজেক্টের জন্য ২০ নম্বরে ভাগ করা হয়েছে। ৮০ এর মধ্যে প্রথম সেমেস্টারে ৪০ এবং দ্বিতীয় সেমেস্টারে ৪০।
দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টার দিতে গেলে একাদশে প্র্যাকটিক্যাল ও থিয়োরিতে সংসদের ধার্য করা পাশ মার্ক পেতে হবে। অর্থাৎ, ৭০ এ ২১ নম্বর পেতে হবে। একই ভাবে থিয়োরি পেপারে ৮০ নম্বরে ২৪ পেতে হবে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সিমেস্টার দিতে হলে।
এ ছাড়াও পরীক্ষা দেওয়ার সময়সীমাও পরিবর্তন করা হল। একাদশের দু’টি সিমেস্টার-সহ উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সিমেস্টার পর্যন্ত পড়ুয়ারা পরীক্ষা দেওয়ার সময় পাবে দেড় ঘণ্টা করে। চতুর্থ সিমেস্টারে সময় পাবে দু’ঘণ্টা করে। তবে, আলাদা করে প্রশ্নপত্র পড়ার কোনও সময়সীমা থাকছে না।