WBCHSE HS

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বছরে দু’বার উচ্চ মাধ্যমিক, নয়া পদ্ধতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে, এবং ২০২৬ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে। প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে ওএমআর শিটে এবং প্রশ্ন হবে এমসিকিউ টাইপ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ১১:৫৮

প্রতীকী ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বছরে দু’বার। সেমেস্টার সিস্টেমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পঠনপাঠনের অনুমতি দিল রাজ্য সরকার।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরই শিক্ষা সংসদের সভাপতি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বছরে দু’বার পরীক্ষার ভাবনা সামনে আনেন। তারপরই এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির মতামতের উপর ভিত্তি করে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণিতে চালু হতে চলেছে সেমেস্টার সিস্টেম।

শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “একটি মাত্র পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। আমরা সেমেস্টার সিস্টেম চালু করছি যা অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত। উচ্চ মাধ্যমিকের পরই পড়ুয়ারা উচ্চ শিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যেখানে সর্বত্র সেমেস্টার সিস্টেমে পড়াশোনা হয়। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক বেশি সুবিধা হবে‌।”

এ বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে ফলাফল বার হওয়ার পর একাদশ শ্রেণিতে যে সমস্ত পড়ুয়া ভর্তি হবে তারা এই সেমেস্টার সিস্টেমের মাধ্যমে পড়াশোনা করবেন। আর বছরে দু’বার করে তাঁদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। এবং ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে তারাই প্রথম সেমেস্টার সিস্টেমের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে, এবং ২০২৬ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে।

প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে ওএমআর শিটে এবং প্রশ্ন হবে এমসিকিউ টাইপ। এবং দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে শর্ট আনসার কোশ্চেন (এসএকিউ) এবং বিস্তারিত উত্তর (বিকিউ) লিখতে হবে পরীক্ষার্থীদের। এবং দ্বাদশ শ্রেণির দু’টি সিমেস্টার থেকে ৫০ শতাংশ করে নম্বরের উপর ভিত্তি করে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা সংসদ।

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে যারা একাদশ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে তারা এই নতুন পদ্ধতির অন্তর্গত হচ্ছে না। তারা পুরনো পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা সংসদ।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “এটি একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। এই নয়া পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে পড়াশোনার মানও সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হবে।”

শিক্ষক মহলের একাংশ এবং সংগঠনগুলি এই নয়া পদ্ধতিকে স্বাগত জানালেও সিলেবাস নিয়ে তাদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ম‌ণ্ডল বলেন, “অভিভাবক মহলের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে সিলেবাস নিয়ে। তার ফলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে বহু পড়ুয়া দিল্লি বোর্ডের দিকে চলে যাচ্ছে বাংলা মাধ্যম থেকে। তাই উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাশাপাশি, উচ্চ প্রাথমিক স্তরেও সিলেবাসের আধুনিকরণ এবং এই ধরনের নতুন পদ্ধতি চালু করা উচিত।

আবার শিক্ষক মহলের একাংশ মনে করছেন জাতীয় শিক্ষানীতিকে মান্যতা দিতে গিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের রাস্তা খুলে দিচ্ছে সরকার। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, “এই ধরনের পদ্ধতি চালু হওয়ার পরে শিক্ষার যে গভীরতা সেটা যে রকম কমে যাবে, একই ভাবে জাতীয় শিক্ষানীতির পথে হেঁটে রাজ্য সরকার প্রাইভেট কোচিং এবং বেসরকারিকরণের রাস্তা অনেকটা মসৃণ করছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement