ছবি: সংগৃহীত।
পোস্ট পাবলিকেশন স্ক্রুটিনি (পিপিএস) ও পোস্ট পাবলিকেশন রিভিউ (পিপিআর) নিয়ে আরও বেশি সতর্ক হতে চায় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই মর্মে সমস্ত প্রধান পরীক্ষককে নির্দেশিকা পাঠাল সংসদ।
প্রত্যেক বছর পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর পরীক্ষার্থীদের একাংশ ফলাফলে সন্তুষ্ট না হয়ে স্ক্রুটিনি এবং রিভিউ করতে দেয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে সেই ফলাফল আসার পরেও বহু পরীক্ষার্থী তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে তথ্যের অধিকার আইন (আরটিআই) অনুযায়ী পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে থাকে। এবং সেখানে দেখা গেছে বহু পরীক্ষার্থীর নম্বর ৫ থেকে ১৫ নম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে শিক্ষা সংসদের মূল্যায়ন নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
পরীক্ষার মূল্যায়নকে ঘিরে শিক্ষা সংসদের ভাবমূর্তি যাতে বজায় থাকে, পরীক্ষার্থীদের খাতার মূল্যায়নে কোন ত্রুটি বিচ্যুতি যাতে না থাকে, তাই এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে প্রধান পরীক্ষকদের।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “এই বিষয়ে সব সময় সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষা সংসদ সব সময় চায় নির্ভুল ভাবে ফলাফল প্রকাশ করতে। এখানে শিক্ষকদের আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলে কোনও অসংগতি না থাকে।”
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে দেওয়া প্রধান পরীক্ষকদের গাইডলাইনে একটি অংশে পরিষ্কার উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত বছরগুলিতে ফলপ্রকাশে কিছু ক্ষেত্রে ত্রুটি বিচ্যুতি ধরা পড়েছে। উত্তরপত্র মূল্যায়ন, কেজিং-এ সঠিক নম্বর তোলা, উত্তরপত্র থেকে মার্কস ফয়েলে নম্বর তোলা, লুজ সিটের হিসাবে গরমিল— এই সম্পর্কে পরীক্ষক এবং সমীক্ষকরা তাঁদের দায় অস্বীকার করতে পারবেন না। এই ধরনের ঘটনা যাতে না হয় তাঁর জন্য প্রধান পরীক্ষকদের আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষকের অধীনে নিরীক্ষক যাঁরা থাকবেন তাঁদের ক্ষেত্রেও নির্দেশিকায় সর্তকতা অবলম্বনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ বছর থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে চালু হচ্ছে অনলাইন ব্যবস্থা। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীদের নম্বর এ বার অনলাইনে আপলোড করতে হবে পরীক্ষকদের। যারা এই অনলাইনে নম্বর আপলোড এর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন তারাও যেন নির্ভুল ভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তা এই গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “কিছু পরীক্ষক ও নিরীক্ষকের ভুলের কারণে এই ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে থাকে। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত শিক্ষকদের। এর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বিষয়টি সকলের মাথায় রাখা উচিত।”
বিগত বছরে পরীক্ষকদের কাছ থেকে পিপিএস ও পিপিআর সংক্রান্ত মুচলেকা নেওয়া হতো। কিন্তু এ বছর শিক্ষা সংসদের দেওয়া গাইডলাইনে সেই মুচলেকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। তার বদলে সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে।