ছবি: সংগৃহীত।
স্কুল পালানো বা প্রক্সি দেওয়ার দিন শেষ, পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে অভিনব উদ্যোগ শহরের একটি স্কুলের। পড়ুয়াদের স্কুলে ঢোকার সময় এবং বেরনোর সময় বাবা মার কাছে এসএমএস চলে যাবে, এমনই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে চলেছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ স্কুল।
স্কুল ড্রেস পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে না গিয়ে কোন পার্কে ছেলে বা মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কি না বা অতিরিক্ত ক্লাসের নাম করে অন্য কোন জায়গায় আড্ডা দিচ্ছে কি না এই তথ্য অভিভাবকরা সবসময় পান না। বর্তমান সময়ে বহু বাবা-মা কর্মরত। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সন্তানরা নিজেরাই স্কুলে যায়। স্কুলে যে হেতু মোবাইল ব্যবহার করা হয় না তাই বাবা-মায়ের পক্ষে পড়ুয়াদের স্কুল চলাকালীন খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয় না। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বহু পড়ুয়া। এ বার তাদের উপর কড়া নজর রাখতে পদক্ষেপ স্কুল কর্তৃপক্ষের। এই কাজে ব্যবহার হবে বিশেষ স্ক্যানারের। যার মাধ্যমে পড়ুয়াদের ইন ও আউট-এর রিয়েল টাইম এসএমএস চলে যাবে অভিভাবকদের কাছে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের দাবিকে মান্যতা দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই নয়া পদ্ধতি শুরু হবে। আশা করছি আমরা সকলের সাহায্য পাব।”
কী ভাবে এই নয়া পদ্ধতিতে কাজ হবে তারও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের একটি করে আই কার্ড দেওয়া হবে। তাতে থাকবে একটি করে নির্দিষ্ট কিউ আর কোড। এবং স্কুলের বিভিন্ন জায়গায় বা প্রবেশদ্বারে লাগানো থাকবে এই কিউ আর কোড স্ক্যানারের বিশেষ ডিভাইস। মোট ১০ ডিভাইস লাগানো থাকবে বলে জানানো হয়েছে স্কুলের তরফ থেকে। স্কুলে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় পড়ুয়াদের কার্ডটি স্ক্যান করাতে হবে। এই যন্ত্রই স্বয়ংক্রিয় ভাবে অভিভাবকদের দেওয়া নম্বরে পড়ুয়ার তথ্য পাঠিয়ে দেবে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই নয়া পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও ক্লাসে তাঁরা ঠিক মতো উপস্থিত থাকছে কি না তা জানতে আবেদন জানিয়েছিলেন বহু অভিভাবক। একটা অংশের অভিযোগ ছিল স্কুলে না এসে সেই সময় অন্যত্র সময় কাটাচ্ছে পড়ুয়ারা। এবং নির্দিষ্ট সময়ে স্কুল ছুটির পর বাড়িও ফিরছিল না। অনেক সময় স্কুলের নামেও নানান অভিযোগ ঘাড়ে চাপাতো পড়ুয়ারা। এই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্কুলের তরফ থেকে।
প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে পড়ুয়াদের মার্কশিটেও তাঁদের উপস্থিতে-র হার উল্লেখ থাকবে এ বার থেকে। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৭০০। একটি অটোমেটিক ডিভাইস সর্বোচ্চ ৪০ জনের আই কার্ড স্ক্যান করতে পারবে। প্রাথমিক ভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ মোট ১০ অটোমেটিক ডিভাইস বসাচ্ছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েক মাস আগে ই-ড্রাইভ নামে বিশেষ সফ্টঅয়্যার চালু করা হয়েছে, সেখানে স্কুলেরযাবতীয় তথ্য ও বিজ্ঞপ্তি সমস্ত কিছু ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেখা যায়। এর জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াকে একটি করে ইউনিক আইডি দেওয়া হয়েছে।