উত্তর কলকাতার কলেজের প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষার মান উন্নয়ন ও ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে রাজ্যের সমস্ত কলেজেই যাতে ‘ন্যাক’ (ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন)-এর মূল্যায়ন সম্পূর্ণ করা হয় তার জন্য উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। কলকাতা উত্তর এবং দক্ষিণ মিলেয়ে মোট ৭৫টি কলেজকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্মশালার মধ্যে দিয়ে।
উচ্চশিক্ষা দফতরের পরিচালনায় উত্তর কলকাতার উইমেন্স কলেজ ক্যালকাটা, বাগবাজার এবং দক্ষিণ কলকাতার বাসন্তী দেবী কলেজে এই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অন ট্রেনিং।’
বাগবাজার কলেজের অধ্যক্ষ অনুপমা চৌধুরী বলেন, “এই ধরনের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ফলে সার্বিক ভাবে শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে। সরকারি এই ধরনের কর্মশালা যত বেশি হবে ততই কলেজ গুলির সুবিধা হবে।”
৯ এবং ১০ জানুয়ারি উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার দু’টি কলেজে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। উত্তর কলকাতায় ৩৫ কলেজের অধ্যক্ষ এবং আইকিউএসসি কো-অর্ডিনেটর-দের নিয়ে প্রথম দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়েছে উইমেন্স কলেজ ক্যালকাটা, বাগবাজার-এ। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়, উচ্চশিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়-সহ উচ্চশিক্ষা দফতরের জয়েন্ট ডিপিআই আসিস ঘোষ।
উপস্থিত অধ্যক্ষ এবং কলেজের সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য তিন জন বিশেষজ্ঞকে রাখা হয়েছিল। তাঁরা হলেন দেবাশিস বিশ্বাস (আইসি), জয়দীপ সারেঙ্গী (নিউ আলিপুর কলেজ অধ্যক্ষ), সম্রাট ভট্টাচার্য (স্কটিশ চার্চ কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর)। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন বেহালা কলেজের অধ্যক্ষ শর্মিলা মিত্র।
শিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে এই ধরনের কর্মশালার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ‘এনআইআরএফ’ ও ‘ন্যাক’-এ ভাল ফল করতে হলে এই প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার কলেজগুলির ক্ষেত্রে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক সরকারি আধিকারিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত সরকার এবং সরকার পোষিত ৭৭ কলেজে মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। সমস্ত কলেজে দ্রুত যাতে মূল্যায়ন সম্পন্ন হয় তার জন্য জেলায় জেলায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২০ থেকে ২২টি কর্মশালা সম্পূর্ণ হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ১০০ শতাংশ কলেজে ‘ন্যাক’ সম্পূর্ণ করতে চায় সরকার।
শিক্ষার পরিকাঠামো থেকে গবেষণার উদ্ভাবন মোট ৭ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মূল্যায়ন করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে ৭০% নম্বর কলেজগুলির পাঠানো তথ্যের উপর নির্ভর করে। আর বাদ বাকি ৩০ শতাংশ নম্বর ‘ন্যাক’-এর প্রতিনিধিদের পরিদর্শনের উপর। কলেজগুলি বছরভর কী পরিকল্পনা করছে, পড়াশোনার মান উন্নয়ন থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বনির্ভর করার জন্যকী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, এই বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হয় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে। আর সেখানেই শহর এবং শহরতলীর কলেজগুলি যাতে ত্রুটিমুক্ত কাজের মূল্যায়ন তুলে ধরতে পারে তাই এই হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।