পথের পাঁচালীর দৃশ্য এবার ক্লাস রুমে। নিজস্ব চিত্র।
বাংলার কৃষ্টি, সাহিত্য ও শিল্প কলার সম্ভারে নবরূপে সেজে উঠছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের শ্রেণিকক্ষ। বাংলা সাহিত্যের নানান ইতিহাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন সাহিত্যিকের বিভিন্ন উপন্যাস এবং গল্পের চরিত্রগুলি শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে রং তুলির ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। যা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি, চরিত্রগুলির সঙ্গে পরিচয় করাবে বলে মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন আমার সহকর্মীরা। স্কুলের নিরস দেওয়ালগুলি যে এমন একটা পড়াশোনার মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে সেটাই আমরা শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরতে চাই। শিশু মনে যেন বাংলার এই অমর সৃষ্টিগুলি এবং তাদের চরিত্রগুলি দাগ কাটে এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
বাংলার বিভিন্ন কালজয়ী সাহিত্য বা উপন্যাসের চরিত্রগুলি আজও অমর হয়ে রয়েছে। বইয়ের পাতা থেকে বিভিন্ন সময় এই চরিত্র গুলিকে সামনে রেখে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। এ বার এই সমস্ত চরিত্রগুলিকে রং তুলির মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে গল্পের আকারে ফুটিয়ে তুলতে চলেছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। যেমন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড়ের শংকর চরিত্রটি, বাঙালি শংকরের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন তুলে ধরা হবে শ্রেণিকক্ষে। পথের পাঁচালীর অপু ও দুর্গার চোখে প্রথম ট্রেন দেখা ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে চিত্রের মাধ্যমে।
বর্তমানে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে মোট ২৮টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। প্রত্যেকটিতে আলাদা আলাদা করে এই ধরনের চরিত্রগুলি তুলে ধরা হবে। যেমন থাকছে যামিনী রায়ের শিল্পকলা। এ ছাড়া নজরুল, বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর ও নেতাজির সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন কাহিনির নানান দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হবে।
শুধু সাহিত্যিক বা মনীষীদের নিয়ে নয় ভূগোল ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন চিত্রও তুলে ধরা হবে। স্কুলের সিঁড়িতে থাকছে বুদ্ধের ছবি ও তার বাণী। স্কুলের বাইরের অংশে মুরাল করা হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। নানা রকমের পটচিত্র বাংলার ‘মধুবনী’এবং মহারাষ্ট্রের ওয়ার্লি আর্ট-এর বিভিন্ন ছবি দেখা যাবে স্কুলের ক্লাসরুমে।