প্রতীকী ছবি
বর্তমানে সাংবাদিকতা পেশায় বিপুল ভাবে ঝুঁকছে নতুন প্রজন্ম। দ্বাদশ শ্রেণী পাশের পর এই বিষয় পড়াশোনার সুযোগও বেড়েছে। তবে, অনেকেই আগ্রহের বশে এই বিষয় নিয়ে পাঠ্যক্রম শুরু করলেও, মাঝপথে ছেড়ে বেরিয়ে যান। এই প্রতিবেদনে সাংবাদিক হওয়ার খুঁটিনাটি আলোচনা করা হল।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: দ্বাদশ শ্রেণীতে নূন্যতম ৫০ শতাংশ নম্বরে পাশ করার পর সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিষয়ে স্বীকৃত কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক পাশ করতে হয়। তবে, অন্য কোনও বিষয় নিয়েও কোনও শিক্ষার্থী স্নাতক পাশ করে সাংবাদিক হতে পারেন। সাংবাদিক হতে প্রয়োজন ভাষার বিশেষ দক্ষতা থাকার।পশ্চিমবঙ্গে সাংবাদিক হতে বাংলা, ইংরেজি, এই দু’টি ভাষার উপর বিশেষ দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়। অন্য কোনও বিভাগে স্নাতক পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকতা বিষয় নিয়ে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা কোর্সও করতে পারেন।
সাংবাদিক হওয়ার প্রয়োজনীয় দক্ষতা:
সাংবাদিকতা পাশের পর এক জন শিক্ষার্থী তাঁর আগ্রহের উপর ভিত্তি করে বাছাই করে নিতে পারেন তিনি কোন বিভাগে সাংবাদিকতা করতে চান। নীচে বিভাগগুলি আলোচনা করা হল।
প্রিন্ট মিডিয়া:
ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়া:
এই বিভাগগুলির মধ্যে নির্বাচনের পর শিক্ষার্থীকে বাছাই করে নিতে হয় সাংবাদিকতার কোন দিকে তিনি অগ্রসর হবেন। অর্থাৎ, রাজনীতি, খেলা, ক্রাইম, বিনোদন, শিক্ষা, সাস্থ্য, অনুসন্ধান এর মতো নানা দিক রয়েছে। এক জন সাংবাদিককে সর্বপ্রথম এই দিকগুলির মধ্যে নিজের আগ্রহের জায়গা নির্বাচন করতে হয়।
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনার পর শুধু যে সাংবাদিকই হওয়া যায় এমনটা নয়। সাংবাদিকতা পাঠ্যক্রমের সময় স্নাতক স্তরে বিজ্ঞাপন, ফিল্ম স্টাডিজ়, জনসংযোগ, নিউ মিডিয়া, মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, রিপোর্টিং, এডিটিং, রেডিয়ো-সহ আরও অনেক বিষয় বিস্তারিত ভাবে পড়ানো হয়। তাই সাংবাদিকতা নিয়ে স্নাতক পাশ করার পর কোনও শিক্ষার্থী যদি চান বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করবেন, তা হলে তিনি বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলিতে আবেদন করতে পারবেন। রিপোর্টিং-এর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হয়। সাধারণত এটি টেলিভিশন মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার একটি অংশ। এই পদে চাকরির জন্য শিক্ষার্থীকে অনেক সময় বিশেষ কোর্সও করতে হতে পারে। ফিল্ম স্টাডিজ় একটি বৃহত্তর বিষয়। স্নাতকস্তরে এই বিষয় পড়ার সময়, শিক্ষার্থীকে ফিল্ম স্টাডি বিষয় নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পড়তে হয়। পরবর্তী কালে এই বিভাগের কাজের ক্ষেত্রও অনেক বড়। এই মুহূর্তে বিভিন্ন মাল্টিনেশন্যাল প্রতিষ্ঠান থেকে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলিও নিজস্ব জনসংযোগ আধিকারিক রাখেন। নিউ মিডিয়া সাধারণত অনলাইন মিডিয়াকেই বলা হয় থাকে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এখন সব কিছুই প্রায় ফোন বন্দি। নিউ মিডিয়ায় নেটমাধ্যম দ্বারা মুহূর্তের মধ্যে কোনও খবর, ছবি, ভিডিয়ো গোটাদুনিয়ার ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কোনও প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসা সংক্রান্ত কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ এবং কী ভাবে বাস্তবে সেই পরিকল্পনা সফল করা যায়, প্রতিষ্ঠানের সঙ্কটমূলক পরিস্থিতিতে কী করণীয় সেই সব অন্তর্ভুক্ত থাকে স্নাতক স্তরের মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। রেডিয়ো-এর ক্ষেত্রে আরজে, সঞ্চালক-সহ বিবিধ ক্ষেত্র রয়েছে।
সাংবাদিকতাকে পেশা করতে এবং মিডিয়াতে কাজ করার জন্য এক জন প্রার্থীকে নিয়মিত খবরের মধ্যে থাকতে হয়। প্রতি দিনের ঘটনাবলী সমন্ধে নিয়মিত ওয়াকিবহল থাকতে হয়। এক জন ভাল সাংবাদিক হতে প্রয়োজন সততা, ধৈর্য, নিয়মিত পড়াশোনা এবং সঠিক উপস্থাপনা। এ ছাড়াও, যদি কোনও শিক্ষার্থী সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিষয় নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করতে চান তা হলে তিনি স্নাতক পাশের পর স্নাতকোত্তর, পিএইচডি করতে পারেন। অথবা নেট, সেট দিয়ে অধ্যাপকও হতে পারেন।