ছবি সংগৃহিত
এই বছর দুর্গাপুজোর আয়োজনে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী রইলো আয়ারল্যান্ড। কর্ক শহরের উল্লেখযোগ্য স্থান ‘সিটি কনসার্ট হল’ এবং ‘মিলেনিয়াম হল’-এ পুজোর উদ্যাপন করা হয়েছিল। প্রায় ১৫০০ মানুষ এখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যা এটিকে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় দুর্গোৎসব করে তুলেছিল।
প্রথম ও প্রাচীনতম দুর্গোৎসব হিসেবে কর্কে এই পুজো শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেই সময় প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং দর্শকের উপস্থিতিতে এই আয়োজন শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এই পুজোর আয়োজনকে সফল করেছেন প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, যারা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এসে আয়ারল্যান্ডে আইটি, ফার্মা, চিকিৎসা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে কর্মরত পেশাজীবী ও ছাত্রছাত্রী। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নিবেদিত প্রয়াসের ফলে এই বছর প্রায় ১৫০০ মানুষের উপস্থিতি এই উৎসবকে এক অনন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
এই বছর স্বেচ্ছাসেবকেরা সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে কঠোর পরিশ্রম করে মণ্ডপসজ্জার কাজ করেছেন, যার মধ্যে সম্পূর্ণ হাতে তৈরি চালচিত্রও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাঁরা সকলেই পূর্ণকালীন পেশাদার হিসেবে কাজ করে আসছেন, তবুও তাদের উত্সাহ এবং আত্মনিবেদনের ফলে এই শিল্পকর্মগুলো সম্ভব হয়েছে। শুধু স্বেচ্ছাসেবকরা নয়, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরাও তাঁদের পেশাগত জীবনের পাশাপাশি নিজেদের এই অসাধারণ পরিবেশনায় নিয়োজিত করেছেন।
শুধু বাঙালি সম্প্রদায় নয়, বরং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক এবং দর্শকরা এই পুজোর আয়োজন ও উদ্যাপনে অংশগ্রহণ করেছেন। এর বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা কর্কের এই দুর্গোৎসবকে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছে। অংশগ্রহণকারীরা গন্ধাল, গারবা, বাংলা লোকনৃত্য, ভারতনাট্যম, বলিউড নাচ, লাবনী এবং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের আরও অনেক নৃত্যশিল্প তুলে ধরেছেন, যা ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে উপস্থাপন করেছে।
এই বছর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কর্কের লর্ড মেয়র, ড্যান বয়েল এবং প্রাক্তন মেয়র, যিনি দীর্ঘদিন ধরেই এই দুর্গাপুজোর সমর্থক। ২০১৭ সালে ডগলাস জিএএ ক্লাবে প্রায় ১০০ জনের ছোট্ট একটি সমাবেশ থেকে শুরু করে, আজ কর্কের সবচেয়ে বিশিষ্ট স্থানে এই উৎসব উদ্যাপন করা সত্যিই এক বড় প্রাপ্তি।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ধুনুচি নাচ এবং ঐতিহাসিক কর্ক সিটি হলে দুর্গা মায়ের আরতি। এই ধুনুচি নাচের মাধ্যমে ভক্তরা মাতৃমূর্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যা উৎসবের ভক্তিমূলক পরিবেশকে আরও শোভিত করে তোলে।
এই অনুষ্ঠানে ২৪টি অংশগ্রহণকারী দল কয়েক মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে এক অসাধারণ নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন। স্থানীয় এবং জাতীয়ভাবে পরিচিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই উৎসবে তাদের সমর্থন জুগিয়েছে, যা আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং ভারতীয়-আইরিশ সম্প্রদায়ের সদস্যরা একত্রে এই পুজো সফল করেছেন যা প্রমাণ করেছে দুর্গাপুজো শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং একতা ও সমৃদ্ধির উদ্যাপন। ‘কর্ক সিটি হল’-এ দুর্গাপুজো উদ্যাপন করা শুধুমাত্র একটি সম্মান নয়, বরং এটি ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি আয়ারল্যান্ডের শ্রদ্ধার প্রতীক।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy