প্রতীকী ছবি
ছিল ভারত-চিন সম্পর্কের সাম্প্রতিক মাইলফলক। এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা বিশ্বের করোনা আতঙ্কের গ্রাউন্ড জিরো। আর তার জেরেই সম্প্রতি ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তিতে বাদ পড়ল ‘উহান’ শব্দটি।
ঠিক দু’বছর আগে চিনের সঙ্গে অভূতপূর্ব দীর্ঘ ঘরোয়া সংলাপ হয়েছিল হুবেই প্রদেশের রাজধানী সেই উহান শহরে, ছবির মতো সুন্দর লেকের ধারে। তার ঠিক পরেই তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দাবি করেছিলেন, উহান সংলাপের পর দু’দেশের মধ্যে আস্থা বেড়েছে কয়েক গুণ। কথা এবং কাজের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে তার পরের সপ্তাহে চিনের স্টেট কাউন্সিলার ঝাও কেঝি এসে তিন বছর ধরে ঝুলে থাকা নিরাপত্তা চুক্তি সই করেছিলেন।
দু’দিন আগে করোনা নিয়ে বিশ্বজোড়া ত্রাসের বাতাবরণেই ৭০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বার্তা দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চিঠি লিখলেন চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যচিয়াংকে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কথা বললেন, চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে। বিনিময়ে তাঁরাও পাঠালেন শুভেচ্ছাবার্তা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির কথা হয়। করোনা নিয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নিয়েও কথা হল দু’পক্ষের। কিন্তু সর্বত্র সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হল উহান-এর উল্লেখ।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটি, ডোকলাম সংঘাত কাটিয়ে মূল স্রোতে ফিরে এসেছিল উহানেই। কূটনীতিতে জন্ম নিয়েছিল নতুন শব্দ— ‘উহান স্পিরিট’। এখন উহানকে ব্রাত্য করে চিনের বিরুদ্ধে পরোক্ষে বার্তা দিতে চাইছে নয়াদিল্লি, মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। আমেরিকার মতো করোনাকে প্রকাশ্যে চিনা ভাইরাস বলা না-হলেও এই ভাইরাস ছড়ানো নিয়ে চিনের ভূমিকা যে সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় এই সংকেতও কিন্তু দেওয়া হচ্ছে সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে।