একই পরিবারের ছয় প্রজন্ম জীবিত রয়েছেন স্কটল্যান্ডে। এঁদের পাঁচ প্রজন্মই মেয়ের মা। মারি মার্শাল, যিনি এই ছয় প্রজন্মের বয়স্কতম সদস্যা তিনি এক মাস আগেই স্বাগত জানিয়েছেন, তাঁর উত্তরতম পুরুষকে। দেড় মাস বয়সের ষষ্ঠ প্রজন্মের মেয়েটির নাম নাইলা ফার্গুসন। নাইলার দৌলতে মারি আপাতত স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে পুরনো দিদা। ইংরেজিতে বললে গ্রেট গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ডমাদার। বাংলায় অতি বৃদ্ধ প্রমাতামহী!
মারির বয়স ৮৬। তাঁর নাতি-নাতনির সংখ্যা ৯০। নাইলা সেই তালিকায় ৯০তম।
মারির এই পরিবার স্কটল্যান্ডে তো বটেই ব্রিটেনেরও একমাত্র, যার ছয় প্রজন্মই জীবিত রয়েছে।
তবে মাত্র ৮৬ বছরেই ষষ্ঠ প্রজন্মের দেখা পাওয়ার নেপথ্যে একটা অঙ্ক আছে। মারির উত্তরসূরীদের প্রত্যেকেই হয় ১৮ বছর বা তার আগেই প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমনকি এই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নাইলার মা টনি লেইয়েরও বয়স এখন ১৭।
মারিই এই পরিবারের প্রধান। তাঁর জন্ম ১৯৩৫ সালে। তিনিও তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সেই।
আট সন্তানের মা মারি। আট জনই কন্যা। এঁদের মধ্যে সবার বড় রোজ থরবার্নের বয়স এখন ৬৮। রোজের চার সন্তান। এঁদের মধ্যে সবার বড় চেরিলের বয়স এখন ৫০। চেরিল মা হয়েছিলেন মাত্র ১৫ বছর বয়সে। ১৯৮৬ সালে তাঁর কন্যা ক্যারির জন্ম হয়। ক্যারি এখন ৩৫। তবে এরই মধ্যে চার সন্তানের মা তিনি। নতুন মা টোনি লেই এইটকেন ক্যারিরই বড় মেয়ে।
টোনি ছাড়া বাকিরা প্রত্যেকেই কর্মরত ছিলেন বা আছেন। স্কটল্যান্ডের জাতীয় চিকিৎসা পরিষেবা এনএইচএস-এর অধীনে এঁরা বংশানুক্রমে সেবিকার কাজ করে আসছেন।
এডিনবরায় কাছাকাছি বাড়ি প্রত্যেকের। বিশাল পরিবারটির সদস্যদের সাক্ষাত্ তাই প্রায়শই হয়।
৮৬ বছর বয়সে তাঁর ষষ্ঠ প্রজন্মের উত্তরসূরিকে নিয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মন্তব্য করেছেন মারি। জানিয়েছেন এত বড় একটা পরিবার পেয়ে তাঁর সুখের শেষ নেই। এখানে কেউ না কেউ কখনও না কখনও পাশে থাকবেই।
মারি জানিয়েছেন, তাঁর এই ক্রমবর্ধমান পরিবারে একটাই অসুবিধা হতে পারত। বড়দিন এবং জন্মদিনে উপহার কেনা। কারণ তেমন হলে বছরের বেশির ভাগ দিন এবং অর্থ উপহার কিনতেই চলে যেত। তবে তাঁর পরিবার তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে রেহাই দিয়েছে।
অতিমারিতে গত দু’বছরে পরিবারের সবাই একসঙ্গে হতে পারেননি। তবে ৯০ জন নাতি-নাতনি এবং মেয়েদের নিয়ে যখন মারির পরিবার একজোট হয়, তখন নাকি এলাকায় কান পাতা যায় না, জানিয়েছেন টোনি।
বরাবরই হইচই করে মেতে থাকা পরিবারটির আগ্রহের কেন্দ্রে অবশ্য এখন একজনই। ৬ পাউন্ড ১৪ আউন্স ওজনের ছোট্ট নাইলা। মারির ষষ্ঠ প্রজন্ম। যা তাঁর নাম ব্রিটেনের রেকর্ডে পৌঁছে দিয়েছে।
টোনি বলেছেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে মজা করছিলাম আমরা। পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি, স্কটল্যান্ডে আমাদের মতো ছয় প্রজন্মের পরিবার আর একটিও নেই।’’
তবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বলছে সবচেয়ে বেশি প্রজন্ম জীবিত আছে এমন পরিবারের রেকর্ড হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। আমেরিকায় সাতটি প্রজন্ম একসঙ্গে জীবিত ছিল সেই পরিবারে।