তুষারঝড়ের পাশাপাশি আমেরিকার মানুষ হাড়কাঁপানো ঠান্ডা বাতাসের কারণে জবুথবু। ছবি: রয়টার্স।
বড়দিনের কয়েক দিন মাত্র আগে আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আছড়ে পড়েছে তুষারঝড়। আর তার ফলে বিপর্যস্ত জনজীবন। তুষারঝড়ের কারণে আমেরিকার প্রায় ১৫ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা গিয়েছিল শুক্রবার। বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘণ্টা চারেক পর বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও এখনও আমেরিকার অনেক বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে কার্যত অন্ধকারে ডুবে রয়েছে আমেরিকার একাংশ। তীব্র তুষারঝড়ের কারণে বন্ধ হয়েছে একাধিক সড়ক। ঝড়ের জেরে বাতিল হয়েছে কয়েক হাজার বিমান।
তুষারঝড়ের পাশাপাশি আমেরিকার মানুষ হাড়কাঁপানো ঠান্ডা বাতাসের কারণে জবুথবু। এতই ঠান্ডা পড়েছে যে, ফুটন্ত জল নিমেষে বরফে পরিণত হচ্ছে বলেও অনেকে জানিয়েছেন। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আমেরিকার আবহাওয়া দফতর ‘ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস’ অনুযায়ী, আমেরিকার জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থাৎ, প্রায় ২৪ কোটি মানুষকে আবহাওয়ার চরম পরিবর্তন সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল।
উত্তর ও দক্ষিণ ডাকোটা, ওকলাহোমা, আইওয়া-সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে না বেরোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওকলাহোমায় তুষারাচ্ছন্ন রাস্তায় দুর্ঘটনার কারণে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবহবিদরা জানিয়েছিলেন, শুক্রবার আমেরিকায় শৈত্যঝড় ‘বম্ব সাইক্লোন’-এ পরিণত হতে পারে। এর ফলে তীব্র বেগে বইবে ঠান্ডা হাওয়া। বায়ুর চাপ থাকবে অনেক কম। হয়েছেও তাই। মিনিয়াপোলিস, শিকাগো এবং উত্তর ও পশ্চিম মিশিগানে তুষারঝড় শুরু হয়েছে।
সে দেশের হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে আমেরিকাবাসীকে আরও বিপাকে ফেলতে পারে তুষারঝড়ের ফলে হওয়া ‘ফ্রস্টবাইট’। তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে গেলে রক্ত চলাচল কমে যায়। উষ্ণ রক্তের অভাবে দেহের ওই অংশ ঠান্ডা হয়ে জমে যায়। ফলে নাক, গাল, হাত, পায়ের আঙুলে ক্ষত তৈরি হয়। একেই ‘ফ্রস্টবাইট’ বলে।