ইজ়রায়েলের ‘পাহারাদার’ আয়রন ডোম। ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েলের ‘নিশ্ছিদ্র পাহারাদার’ বলে মনে করা হয় ‘আয়রন ডোম’কে। সেই পাহারাদারও কার্যত ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে পড়েছিল হামাসের মুহুর্মুহু হামলায়। যে ‘আয়রন ডোম’কে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ হিসাবে মনে করা হয়, হামলা প্রতিরোধক যে অস্ত্রের জন্ম ইজ়রায়েলেই, সেই অস্ত্রই কেন হামাসের রকেট হামলাকে একেবারে রুখে দিতে পারল না?
ইজ়রায়েলের আকাশসীমায় কড়া নজরদারি চালায় আয়রন ডোম। রোট হামলা হোক বা ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি ড্রোন হামলা— কোনও কিছুই এর নজর এড়িয়ে যেতে পারে না। ইজ়রায়েলের মাটিতে হামলা করার আগেই সেই সব আকাশেই সেই লক্ষ্যবস্তুকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ভূমি থেকে আকাশ স্বল্প পাল্লার হামলা প্রতিরোধক এই আয়রন ডোম মূলত তিনটি কাজ করে। রাডারের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করা, দ্রুত সেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য তৎপর হওয়া এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে রুখে দেওয়া।
প্রতিনিয়ত আকাশ প্রতিরোধক এই ব্যবস্থাকে উন্নত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। তাদের আকাশসীমাকে আরও নিশ্ছিদ্র করতে আয়রন ডোমকে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত করা হয়েছে। ফলে আয়রন ডোমের নজরদারি এড়িয়ে আকাশপথে ইজ়রায়েলে হামলা চালানো প্রায় অসম্ভব। কিন্তু এ বার সেই ‘নিশ্ছিদ্র পাহারাদার’কেও একের পর এক রকেট হামলায় বিভ্রান্ত করে দিতে সক্ষম হয়েছে হামাস বাহিনী।
বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, অনেক দিন ধরেই ইজ়রায়েলের এই পাহারাদারের দুর্বলতা খোঁজার কাজ চালাচ্ছিল হামাস। সেই দুর্বলতা খুঁজেও বার করে ফেলে তারা। শনিবার হামলার প্রথম ধাক্কাটা এনেছিল আয়রন ডোমকে ‘বিভ্রান্ত’ করে। ২০ মিনিটের মধ্যে পাঁচ হাজার রকেট গাজ়া থেকে ইজ়রায়েলে ছোড়ে হামাস বাহিনী। এত কম সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার রকেট হামলা ঠেকানোর জন্য পুরো শক্তি কাজে লাগিয়েছিল আয়রন ডোম। কিন্তু একসঙ্গে বিভিন্ন দিক থেকে রকেট হামলা হওয়ায় প্রত্যেক লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে আঘাত হানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ফলে মুহুর্মুহু রকেট হামলায় প্রথম দিকে প্রায় দিশাহারা হয়ে পড়ে ইজ়রায়েল। কিন্তু পাল্টা জবাব দিতেও বেশি সময় নেয়নি তারা। এর পরই গাজ়া ভূখণ্ডে হামাস বাহিনীর ডেরা চিহ্নিত করে জোরদার হামলা চালায় ইজ়রায়েলি সেনা।