কিভ ছাড়তে বাস স্ট্যান্ডে উপচে পড়ছে ভিড়। ছবি রয়টার্স।
দুপুর আড়াইটে বেজে গিয়েছে। দাঁড়িয়ে আছি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য। সামনে বিরাট বড় লাইন। সকলেই চাইছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিছুটা হলেও কিনে রাখতে।
কালও কিন্তু এমন পরিস্থিতি ছিল না। এর আগে ভারতীয় দূতাবাস থেকে আমাদের বলা হয়েছিল যেন হস্টেলেই থাকি। ইউক্রেনের কিভে ‘বোগোমলেটস ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আমি। তামিলনাড়ুর থুটুকুড়ি (আগে যার নাম ছিল টিউটিকরিন) থেকে এসে এই তিন বছর কিভ শহরে ভালই কাটছিল। এখানে এমবিবিএস পড়তে হয় ছয় বছর। কোর্স শেষ হওয়ার আগেই এমন অভিজ্ঞতার
মুখোমুখি হলাম!
ভারতীয় দূতাবাসের নির্দেশ মেনে আমরা, ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দিন ধরেই ক্লাস করতে যাচ্ছিলাম না। হস্টেলে থেকে ‘জ়ুম’-এ ক্লাস করছিলাম। অন্যান্য দেশের ছাত্রছাত্রীরা যাঁরা আছেন, তাঁরা ধীরে ধীরে নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছিলেন। ভারতীয়দের সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার অনেক পড়ুয়া এখানে আছে। তাদের অনেকেই বাড়ি চলে যাচ্ছিলেন। অনেকে বসে ছিলেন পরিস্থিতি দেখতে। আমিও তাই ছিলাম। ভেবেছিলাম সে রকম হলে সঙ্গে সঙ্গে প্লেনের টিকিট কেটে তামিলনাড়ুর বাড়িতে ফিরে যাব।
কিন্তু আজ ছবিটা পাল্টে গেল। সকাল থেকেই বেশ কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। বারবার কানে আসছে সাইরেনের আওয়াজ। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে। আমাদের হস্টেলে থাকতে বলেছে। হস্টেল নম্বর সাতে আমরা, ভারতীয় ছাত্ররা সব একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের অনেক সিনিয়র আলাদা অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। তাঁরাও এই হস্টেলে চলে এসেছেন। আমাদের বলা হয়েছে, যতটা সম্ভব খাবার এবং পানীয় জল যেন মজুত করে রাখি। এখন এসেছি তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিছু কিনতে। এখনও জানিনা সামনে কী অপেক্ষা করছে। কতটা খারাপ হতে পারে পরিস্থিতি।
লেখক ডাক্তারি ছাত্র
অনুলিখন: মধুমিতা দত্ত