বিনা অনুমতিতে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে নজরদারি চালানো নিয়ে কিছুটা সুর নরম করল আমেরিকা। জানাল, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখা হোক বা অন্যান্য ক্ষেত্রে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক টিকিয়ে রাখা তাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। তবে লক্ষদ্বীপের কাছে নজরদারি চালানোয় আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সুরক্ষা আইন লঙ্ঘিত হয়নি বলে ফের এক বার দাবি করেছে আমেরিকা।
গত ৭ এপ্রিল আমেরিকার নৌবাহিনীর সপ্তম বহর লক্ষদ্বীপের পশ্চিমে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলের ১৩০ নটিক্যাল মাইলের ভিতর ঢুকে পড়ে। তা নিয়ে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে গত এক সপ্তাহ ধরে। সেই পরিস্থিতিতে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের এক মুখপাত্র নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মাফিকই গত ৭ এপ্রিল ভারত মহাসাগরে নজরদারি চালিয়েছে ইউএসএস জন পল জোন্স রণতরী। আন্তর্জাতিক সমুদ্র সুরক্ষা আইন এবং স্বাধীনতাকে দীর্ঘ দিন ধরে সমর্থন করে আসছে আমেরিকা। তারই আওতায় এই নজরদারি।’’
আন্তর্জাতিক সমুদ্র সুরক্ষা আইন অনুযায়ী উপকূল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকা যে কোনও দেশের জলসীমা বলে বিবেচিত হয়। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় অর্থনৈতিক কাজকর্ম চালানোর অধিকার রয়েছে যে কোনও দেশের। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই আইনে সায় দিয়ে যে সমস্ত দেশ স্বাক্ষর করেছে, ভারত তাদের মধ্যে অন্যতম। আমেরিকা যদিও ওই আইনে স্বাক্ষর করেনি।
তাই বিনা অনুমতিতে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমেরিকার নৌবাহিনীর ঢুকে আসা ভাল ভাবে নেয়নি দিল্লি। আমেরিকা যদিও আগেই জানিয়েছিল যে, আন্তর্জাতিক আইনে এই ধরনের কোনও অনুমতির প্রয়োজন নেই। এ বারও একই কথা জানিয়েছে তারা। তবে ভারতের সঙ্গে যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তা-ও জানিয়েছে। ওই মুখপাত্র বলেন, ‘‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য সব ক্ষেত্রেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত মূল্যবান আমাদের কাছে।’’
যে ইউএসএস জন পল জোন্স জাহাজ নিয়ে নজরদারি চালিয়েছে আমেরিকার নৌবাহিনী, সেটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজ। বিনা অনুমতিতে ওই জাহাজ নিয়ে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমেরিকার ঢুকে পড়া উচিত হয়নি বলে আগেই জানিয়েছে দিল্লি। তবে এর পিছনে কোনও সামরিক অভিসন্ধি ছিল না বলে দাবি করেছেন পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন এফ কিরবি।