ফাইল চিত্র।
গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর পরই নিজের পূর্বসূরির পথে না হেঁটে প্রতিদ্বন্দ্বী চিনের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর বার্তা দিয়েছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বেজিং অবশ্য আজ চড়া গলায় বুঝিয়ে দিল যে, তারা বাইডেনের দেখানো রাস্তায় আদৌ হাঁটতে রাজি নয়। আজ দু’দেশের উপ বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে ওয়াশিংটনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে চিন। সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে, চিনকে সর্বদা দমিয়ে রাখতেই তাদের ‘মনগড়া শত্রু’ বানিয়ে রাখে আমেরিকা।
উত্তর চিনের তিয়ানজিন শহরে আজ বৈঠকে বসেছিলেন আমেরিকান উপ বিদেশসচিব ওয়েন্ডি শেরম্যান এবং চিনের উপ বিদেশমন্ত্রী শি ফেং। কয়েক মাস আগে আলাস্কায় দু’দেশের শীর্ষ স্থানীয় কূটনীতিকরা আলোচনার টেবিলে বসেছিলেন। তার পরে আজ ফের উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠক হয়। কড়া কোভিড বিধির জন্য বৈঠক চত্বরে বিদেশের কোনও সাংবাদিক ঢোকার অনুমতি পাননি। তবে চিনের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর পরই চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যমে আমেরিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ফেং। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, চিনের উন্নয়ন আটকাতেই তাদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক ও মনগড়া অভিযোগ আনে আমেরিকা। ওয়াশিংটন দমনমূলক কূটনীতির স্রষ্টা বলেও আক্রমণ করেন তিনি। ফেংয়ের কথায়, ‘‘মনে হয় যেন
চিনকে দমিয়ে রাখতে পারলেই নিজেদের অভ্যন্তরীণ সব সমস্যার সমাধান করে নিতে পারবে আমেরিকা। এটা আমরা কখনওই মানব না। অবিলম্বে আমাদের শত্রু ভাবা বন্ধ করুক আমেরিকা।’’
শেরম্যান অবশ্য প্রাথমিক ভাবে চিনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। প্রথমে তাঁর চিন সফরে আসার কথাও ছিল না। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়ার মতো এশিয়ার কয়েকটি দেশে সফর সেরেই আমেরিকা ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আচমকাই তাঁর চিনে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে হোয়াইট হাউস। বলা হয়েছিল, চিনের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলতেই উপ বিদেশসচিব এই সফরে যাচ্ছেন। আজকের বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র বার হয়নি বলেই খবর। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কবে বৈঠকে বসবেন, তা নিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে ফেংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে আলোচনায় বসেন শেরম্যান। হংকং, তিব্বতের মতো এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলি নিয়ে সরব হতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। সাইবার হামলা নিয়েও চিনা বিদেশমন্ত্রীর কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আমেরিকান উপ বিদেশসচিব। বৈঠকের পরে আমেরিকান এক শীর্ষ স্থানীয় কূটনীতিক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘চিন আর আমেরিকা যে সব ক্ষেত্রে বিরুদ্ধ মত পোষণ করে, একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই তার সমাধান সম্ভব।’’
সংবাদ সংস্থা