আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার সংঘর্ষবিরতির আর্জি উড়িয়ে গাজ়া ভূখণ্ডে তীব্র থেকে তীব্রতর হামলা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর যুক্তি, সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করলেই ফায়দা নেবে হামাস। তবে হাল ছাড়ছে না আমেরিকা। স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে এই পরিস্থিতিতেই শনিবার ইজ়রায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে যান আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তবে নিরাপত্তার কারণেই আগে থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। রামাল্লায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তিনি দেখা করেন প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে। হামাস-বিরোধী ফতেহ দলের নেতা আব্বাস। রামাল্লা প্রশাসন জানিয়েছে, ইজ়রায়েলি হামলায় সেখানে অন্তত ১৫০ জন প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন। ওয়েস্টব্যাঙ্কের পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকার পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ইউরোপ, আরবের দেশগুলি এবং রাষ্ট্রপুঞ্জ। এ বিষয়ে ইজ়রায়েলের সঙ্গে কথা বলার জন্যে আমেরিকাকে চাপ দিচ্ছে মিশর এবং জর্ডন।
তবে নিজের অবস্থানে অনড় নেতানিয়াহু সরকার। শনিবারেও ইজ়রায়েলি হামলায় গাজ়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ৫৫ জন শরণার্থী নিহত হন। সম্প্রতি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়ার রাশ প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষের হাতে যাওয়া উচিত। তবে ইজ়রায়েলের কেউ কেউ মনে করেন, গাজ়ার নিয়ন্ত্রণ তাঁদের হাতেই আসা উচিত। ইজ়রায়েলের ঐতিহ্য রক্ষাকারী মন্ত্রী অ্যামিচাই এলিইয়াহুর বক্তব্য তেমনই। চরমপন্থী এই মন্ত্রীর সাম্প্রতিক এক মক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘গাজ়ার পরমাণু বোমা ফেলা যেতে পারে।’ এই মন্তব্যে বেজায় চটেছেন নেতানিয়াহু। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) বিবৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী এলিইয়াহুর বক্তব্যের কোনও বাস্তবিক ভিত্তি নেই। নিরাপরাধ সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতি মেনেই ইজ়রায়েল কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। জয় নিশ্চিত না-হওয়া পর্যন্ত আমরা তা চালিয়ে যাব।’
হামাসের হাতে পণবন্দি ইজ়রায়েলিদের মুক্তির দাবিতে শনিবারেও তেল আভিভে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়। এঁদের অনেকেই নেতানিয়াহুর যুদ্ধনীতির সমর্থক হলেও, কেউ কেউ নেতানিয়াহুর আগ্রাসী সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন। তাঁদের মতে, এর ফলে পণবন্দিদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের সম্ভাবনা আরও কমে আসছে।