হাফিজ সইদ, ছবি: এপি
মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করা হলেও পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে নয়াদিল্লির সন্দেহ ছিলই। এ বার সেই সন্দেহ আরও উস্কে দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্তার মতে, এমন লোক দেখানো পদক্ষেপ আগেও করেছে পাকিস্তান। তাই পাক প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে, হাফিজ সইদ নিয়ে কড়া বার্তাও শুনিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন।
গত বুধবার, গোটা দুনিয়াকে আরও একবার চমকে দিয়ে হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করেছিল পাক প্রশাসন। কিন্তু, জঙ্গি দমনে ইমরান খানের সরকারের ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে যে প্রশ্নটা আন্তর্জাতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছিল, তা এ বার তুলে দিল আমেরিকা। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এর আগেও জামাত উদ দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু, এ বার আর লোক দেখানো নয়, আমরা ইসলামাবাদের কড়া পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছি।”
২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার পর থেকে অন্তত সাত বার হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করেছে ইসলামাবাদ। কিন্তু, আন্তর্জাতিক জঙ্গি তকমা প্রাপ্ত হাফিজের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে বার বারই হাত কেঁপে গিয়েছে ইসলামাবাদের। এ বারও কি একই পরিণতি? সন্দেহের সেই সুর শোনা গিয়েছে মার্কিন প্রশাসনের ওই কর্তার গলাতেও। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “এমন গ্রেফতারের ইতিহাস আমরা জানি। পাক গুপ্তচর সংস্থা যে এই ধরনের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করে, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনও ধোঁয়াশা নেই।”
আরও পড়ুন: দেশকে ভালবাসতে হবে, বার্তা ট্রাম্পের
তাই, হাফিজ সইদকে ঢাকঢোল পিটিয়ে গ্রেফতারে নতুন কিছু দেখছে না ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রশাসনের ওই কর্তার মতে, “সত্যি কথা বলতে, এর আগে হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করা হলেও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপে ছেদ পড়েনি।”
তা হলে, হাফিজ সইদকে এমন ভাবে গ্রেফতারের কারণ কী? আগামী সপ্তাহেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর লক্ষ্য, ট্রাম্প সরকারের কাছ থেকে নানা খাতে ত্রাণ আদায় করে নেওয়া। তাই মনে করা হচ্ছে, হাফিজকে গ্রেফতার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, আন্তর্জাতিক মহলকে বার্তা দেওয়ার কাজটাও আগেভাগে সেরে রাখলেন ইমরান। কিন্তু, পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ইমরানের এই ‘সদিচ্ছা’ দেখানোর কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
ইসলামাবাদের এমন অবস্থানে সাবধানী পদক্ষেপ করছে নয়াদিল্লিও। মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ যাতে আর ছাড়া না পায়, তার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের উপর চাপ জিইয়ে রাখার কৌশল নিয়েই এগোচ্ছে ভারত।
আরও পড়ুন: ইমরানের সফরেও বন্ধ মার্কিন অনুদান!