গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণের দিন নরেন্দ্র মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু, তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানি নিয়ে ভারতকে ‘ধাক্কা’ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুযোগ সুবিধা বাতিল করে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর হিউস্টনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনদের সভায় মোদী-ট্রাম্প সাক্ষাতের আগে ফের ছবি বদলানোর ইঙ্গিত। এক সময় বাণিজ্যে ভারতকে দেওয়া সেই ‘বিশেষ সুবিধা’ ফেরানোর জন্য এ বার আর্জি জানালেন মার্কিন আইনপ্রণেতারাই।
ভারতকে ওই ‘বিশেষ’ সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মার্কিন বাণিজ্য দূত রবার্ট লাইথিজারকে চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন আইনসভার সদস্যরা। তাতে সই করেছেন ডেমোক্র্যাটদের ২৬ জন ও রিপাবলিকানদের ১৬ জন আইনপ্রণেতা। চিঠিতে, বাণিজ্য ক্ষেত্রে ‘লাভ ঘরে তোলার’ জন্য পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। আরও বলা হয়েছে, ‘মার্কিন শিল্পমহল দীর্ঘ দিন ধরে যে বাজার ধরতে চাইছে এমন প্রচেষ্টায় তা নিশ্চিত হবে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে এমন ইস্যু থাকা উচিত নয়।’
জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স বা জিএসপি প্রকল্পে উন্নয়নশীল বেশ কিছু দেশকে বিশেষ সুবিধা দেয় মার্কিন সরকার। যাতে কোনও রকম শুল্ক ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওই সব দেশের পণ্য ঢুকতে পারে। আর কম দামে ক্রেতারা সেগুলি কিনতে পারেন। এত দিন ভারতও সেই সুবিধা পেত। দীর্ঘ দিনের পুরনো এই মার্কিন বাণিজ্য নীতির সুবিধা পেত অন্তত দু’হাজার ভারতীয় পণ্য। শুল্ক ছাড়ের ফলে, ২০১৭ সালে ৫৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ভারতীয় পণ্য মার্কিন বাজারে ঢুকেছিল। কিন্তু এ বছর মার্চ মাসে প্রথম বার ভারতকে সেই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর যুক্তি ছিল, জিএসপি প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পায় ভারত। অথচ ভারতের বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপানো হয়।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে মোদী-চিনফিং বৈঠকে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উঠবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা
ভারতের থেকে জিএসপি প্রত্যাহার করায় শুধু ভারতীয় সংস্থাই নয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারও। সেই আশঙ্কার কথা আগেই শুনিয়েছিলেন কোয়ালিশন ফর জিএসপি-র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ড্যান অ্যান্থনিও। গত জুনেই ওই সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সময়েই তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জোরাল প্রভাব ফেলবে বলে জানান তিনি। এতে সে দেশের ছোট ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও কর্মসংস্থান কমবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: দেশে বহু দলে আপত্তি অমিত শাহর, এ বার কি এক দেশ, এক দল!
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন মুলুকের হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ নামে এক সভার আয়োজন করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনরা। সেখানে যোগ দেবেন মোদী। থাকবেন ট্রাম্পও। সেখানে দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় উঠে আসতে পারে জিএসপি-তে ভারতের ফের অন্তর্ভুক্তির কথা।