নরেন্দ্র মোদী এবং ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধার আশঙ্কা আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে মনে করছে আমেরিকার গোয়েন্দা ও গুপ্তচর সংগঠনগুলি।
আমেরিকার কংগ্রেসকে দেওয়া বাৎসরিক রিপোর্টে ‘অফিস অব দি ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স’ জানিয়েছে, পাকিস্তানের দিক থেকে উস্কানি বরাবর ছিল, এখনও আছে। কিন্তু মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই উস্কানিতে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়ে বসার প্রবণতা ও আশঙ্কা খুবই বেড়েছে। ভারত ও পাকিস্তান— দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর। তাই সাধারণ যুদ্ধ যে কোনও সময়ে পরমাণু যুদ্ধে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাশ্মীরে সন্ত্রাস বা ভারতের কোথাও জঙ্গিহানা দু’দেশের মধ্যে জমে থাকা টন টন অবিশ্বাসের বারুদে স্ফুলিঙ্গের ছোঁয়া দিতে পারে বলে মনে করছেন আমেরিকার গোয়েন্দারা।
শুধু ভারত-পাকিস্তান সংঘাতই নয়, লাদাখের গালওয়ান নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি বলে মনে করেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। এই রিপোর্টে তাঁরা আমেরিকার কংগ্রেসকে বলেছেন, দীর্ঘ আলোচনার পরে দুই দেশ গালওয়ান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বটে, কিন্তু যে কোনও সময়ে চিন আবার প্ররোচনা সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে ভারত-চিন সম্পর্ক। এই আশঙ্কার কারণ হিসেবে আমেরিকার গোয়েন্দারা মনে করছেন, চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই বহু কোটি অর্থ বিনিয়োগ করে এশিয়া জুড়ে সড়ক যোগাযোগ তৈরির পরিকল্পনা নেয়। আমেরিকার গোয়েন্দারা বলছেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ’ নামে এই কর্মসূচির একটা উদ্দেশ্য যেমন পণ্য সরবরাহের সমস্যা মিটিয়ে চিনা বাণিজ্যে গতি আনা, মহাদেশে বেজিংয়ের প্রভাব মজবুত করা, তেমনই চিনের ভেতরের টন টন উপজাত বর্জ্য অন্য দেশে ফেলে দিয়ে আসা। এই প্রকল্প রূপায়ণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত সরকারের অবস্থান। দিল্লি কূটনৈতিক ভাবে চিনের ওই সড়ক প্রকল্পের বিরোধিতায় নেমেছে। আমেরিকার গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই কারণে ফের যে কোনও অজুহাতে ভারতের সঙ্গে টক্করে নামবে চিন। আর তা থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যেতেই পারে।