রুশ হামলায় পিছু হঠছে ইউক্রেন। ছবি: সংগৃহীত।
দ্বিতীয় দিনের যুদ্ধেই ইউক্রেনের রাজধানী কিভের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে রুশ ফৌজ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত সেনারা লড়াই চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত গত দিন রুশ হামলা প্রতিরোধ করতে পারবে, সে বিষয়ে সন্দিহান প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রতিবেশী নেটো সদস্যরাষ্ট্রগুলির সুরক্ষায় তৎপর হয়েছে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। সূত্রের খবর, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরিতে মোতায়েন নেটো বাহিনী ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের যুদ্ধেই ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ এবং চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নেয় রুশ সেনা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষিত ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক (পূর্ব ইউক্রেনের এই দুই অঞ্চলকে একত্রে ডনবাস বলা হয়) এর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী রুশ সেনা খারকিভ দখলের পর কিভ অভিমুখে যাত্রা করে। অন্যদিকে, উত্তরে বেলারুশ সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়া একটি রুশ ব্রিগেড বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চেরনোবিল দখলের পরে একই উদ্দেশ্যে এগোতে থাকে। মনে করা হচ্ছে রুশ ট্যাঙ্ক ডিভিশনের ওই বাহিনীটিই কিভের সবচেয়ে কাছে রয়েছে।
রুশ বাহিনীর তৃতীয় আক্রমণের কেন্দ্র ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ। সেখানে কৃষ্ণসাগরে আগে থেকেই মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক রুশ রণতরী। সেই সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দ্রুত ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে সেনা অবতরণের উদ্দেশ্যে ‘অ্যাম্ফিবিয়ান ল্যান্ডিং ভেহিকল্’। সেগুলির সাহায্যে দক্ষিণ ইউক্রেনের উপকূলবর্তী মারিউপোল এবং ওডেসায় রুশ বাহিনীর অবতরণের খবর মিলেছে।
ক্রাইমিয়ার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি রুশ। তাদের নিয়ে গঠিত প্রায় কয়েক হাজার যোদ্ধার মিলিশিয়া বাহিনীও রয়েছে সেখানে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যারা রুশ সেনার সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ থেকেও রুশ ফৌজের একটি বাহিনী কিভের দিকে যাত্রা করেছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নেটোর জরুরি বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিবেশী সদস্যরাষ্ট্রগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আলোচনা হয়। নেটোর সেক্রেটারি জেনারেল জোন্স স্টোলেনবার্গ বলেন, ‘‘ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা পূর্ব ইউরোপে নতুন করে অশান্তির কারণ হবে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’ আগামী দিনে ‘পূর্ব সীমান্তে’ আরও সেনা মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরি ছাড়াও ইউক্রেনের প্রতিবেশী স্লোভাকিয়া এবং রোমানিয়া নেটো জোটের সদস্য।