ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বের সামনে কোণঠাসা রাশিয়া। আমেরিকা, ফ্রান্স-সহ একাধিক দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের বিরুদ্ধে। এই দলে রয়েছে ব্রিটেনও। তবে কিছুটা অস্বস্তিতে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। কারণ, তাঁর পরিবারের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক যোগের কথা তোলা হয়েছে এক সাক্ষাৎকারে!
এ ক্ষেত্রে বিতর্ক ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসকে ঘিরে। ওই সংস্থার ০.৯১ শতাংশ মালিকানা রয়েছে ঋষির স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির কাছে। তিনি সংস্থার কর্ণধার নারায়ণ মূর্তির কন্যা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেও মস্কোয় ইনফোসিসের অফিসটি চালু রয়েছে। রাশিয়ার ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে এখনও তাদের আর্থিক লেনদেন চলছে। এক টিভি সাক্ষাৎকারে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করা হয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রীর সামনে। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ঋষির উদ্দেশে বলেন, যেখানে ব্রিটেনবাসীদের বলা হচ্ছে ইউক্রেন থেকে বিতাড়িতদের আশ্রয় দিতে, তাঁদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে— সেখানে তাঁর পারিবারিক সংস্থা কী করে রুশ সরকারের সঙ্গে এখনও বাণিজ্যিক যোগ রেখে চলছে! কিছুটা ব্যঙ্গের মোড়কেই ঋষিকে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন যে, তবে কি নিজের বাড়ির অন্দরমহলে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রীর কথা শোনা হয় না?’’
প্রশ্নটি শুনে ঋষি খানিকটা আশ্চর্য হয়ে যান ঠিকই, তবে প্রত্যুত্তরে কোনও বিতর্কে যেতে চাননি তিনি। বরং বলেন, ‘‘আমি একজন নির্বাচিত রাজনীতিক এবং আমার উপরে যা যা দায়িত্ব রয়েছে, তা নিয়েই কথা বলতে আমি দায়বদ্ধ। আমার স্ত্রীর ক্ষেত্রে বিষয়টি তা নয়।’’ সঙ্গে ঋষি যোগ করেন, ‘‘তা ছাড়া আমার মনে হয় না, বিষয়টি আদতে এ রকম। আমার ধারণা, প্রত্যেক সংস্থার কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তই বলবৎ থাকে।’’ তবে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী এ-ও জানান, যে সব সংস্থা পুতিন প্রশাসনকে সরাসরি সাহায্য করছে বলে উঠে এসেছে, তাদের উপর যথাযথ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রিটেন। ফলে রাশিয়ার কাছে ঠিক বার্তাই গিয়েছে বলে তাঁর মত।
তবে এর পরে সঞ্চালক ঋষির দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তা হলে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ইনফোসিসের অবস্থান কি ঠিক?’’ ঋষির উত্তর, ‘‘ইনফোসিসের কাজকর্মের বিষয়ে আমার কোনও ধারণাই নেই, কারণ ওই সংস্থার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ গত কালই বসন্তকালীন বাজেট পেশ করেন ঋষি। তা নিয়ে কথা বলতেই এ দিন ওই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল তাঁকে। তবে ইনফোসিস নিয়ে ঋষি এবং সঞ্চালকের কথোপকথনের কারণেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই সাক্ষাৎকারটি।