ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। ছবি: রয়টার্স।
আর এক সপ্তাহও বাকি নেই ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে। দেশ জুড়ে এখন জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। তার মধ্যেই স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক জাতিবিদ্বেষের শিকার হলেন। গত কাল বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, তাঁর প্রতি এই ধরনের মন্তব্যে শুনে তিনি ক্ষুব্ধ তো বটেই, মর্মাহতও।
অভিযোগের তির রিফর্ম ইউকে দলের এক নেতা, অ্যান্ড্রু পার্কারের দিকে। একটি টিভি চ্যানেলে দলের প্রধান তথা এ বারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে হাউস অব কমন্সের অন্যতম প্রার্থী নাইজেল ফারাজের হয়ে বক্তব্য রাখছিলেন পার্কার। সেখানেই সুনক সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে বসেন তিনি। সুনককে তিনি ‘পাকি’ বলে সম্বোধন করেন বলে অভিযোগ। ইউরোপীয় দেশগুলিতে
বসবাকারী দক্ষিণ এশীয়দের জন্য যা অত্যন্ত অবমাননাকর মন্তব্য বলে মনে করা হয়।
এই মন্তব্য নিয়েই সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলেছেন সুনক। ৪৪ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমার দুই মেয়েকেও আমার সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য শুনতে হল। এটা আমাকে আঘাত তো করেইছে, সেই সঙ্গে ক্ষুব্ধও করেছে।’’ পাশাপাশি, ফারাজের দলকেও একহাত নিয়েছেন সুনক। জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন প্রচার সভায় শাসক দল কনজ়ারভেটিভ পার্টি ও তার নেতাদের উদ্দেশে রিফর্ম ইউকে-র নেতারা যে ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন, তা দেখেই বোঝা যায় যে ঠিক কোন ধরনের সংস্কৃতিতে এই দল বিশ্বাস করে।
সম্প্রতি বেশ কিছু স্থানীয় নির্বাচনে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে সুনকের দল কনজ়ারভেটিভ পার্টি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাঁর দলেরই একাংশ ব্যাপক ক্ষুব্ধও। ব্রিটেনের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সেই ক্ষুব্ধ কনজ়ারভেটিভ নেতাদের একাংশ এ বার ফারাজের দলকেই ভোট দিতে পারেন। তাই নিজে বিদ্বেষের শিকার হয়ে ফারাজের দলের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন সুনক। ফারাজ নিজে বারবার দাবি করেছেন, এ বার লেবার পার্টি ব্রিটেনে ক্ষমতায় এলে তাঁরাই হবেন পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল। সুনক অবশ্য ব্রিটেনের সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, লেবারেরা ক্ষমতায় এলে তাঁদের ঘাড়ে আয়করের বোঝা এমন পরিমাণে বাড়বে যে জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
পার্কার এ ভাবে সুনককে আক্রমণ করার পরে অবশ্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে ফারাজ সুর নরম করেছেন। জানিয়েছেন, পার্কারের শব্দচয়ন ‘সাঙ্ঘাতিক’। ফারাজ আরও জানিয়েছেন, দলের কিছু সংখ্যক নেতা এই ধরনের মত পোষণ করেন। তাঁদের প্রতি তাঁর কোনও সমর্থন নেই। ফারাজ আরও বলেছেন, ‘‘চাইলে ওঁরা অন্যত্র যেতে পারেন।’’