কিভের রাস্তায় জেলেনস্কির সঙ্গে বরিস জনসন। ছবি— রয়টার্স।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করলেন। অথচ কাকপক্ষী টের পেল না। বরিস কার্যত লোকচক্ষুর অন্তরালে সেরে ফেললেন কিভ সফর। কিন্তু কী ভাবে? সেই নিয়ে কৌতূহল যখন দানা বাঁধছিল তখন রহস্য উদ্ঘাটিত হল। লন্ডন ফেরার পর জানা গেল, ট্রেনে করে ইউক্রেন গিয়েছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ইউক্রেন সফর সেরে লন্ডন ফেরার পথে তাঁর যাত্রা সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ট্রেনে যাত্রা করছেন বরিস। চলন্ত ট্রেনেই একটি ভিডিয়ো বার্তাও রেকর্ড করেছেন তিনি। সেই ভিডিয়ো বার্তায় বরিসকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমি এই দুর্দান্ত রেলে চড়ে পোল্যান্ড থেকে কিভের পথে যাচ্ছি। আমি শুধু এই দুর্দান্ত রেলওয়ের সমস্ত কর্মীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি শুনলাম, আপনাদের ‘আয়রন পিপল’ বলে ডাকা হয়। সত্যিই তাই, আপনারা ওই নামের যোগ্য। দেশে যখন বিপর্যয়, তখন আপনারা যে লৌহকঠিন মানসিকতা দেখিয়ে এখনও রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রেখেছেন, তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।’’
সূত্রের খবর, পোল্যান্ডের কোনও একটি স্টেশন থেকে কিভগামী ট্রেনে ওঠেন বরিস। সেই ট্রেনে সোজা পৌঁছন কিভে। সেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্স্কির সঙ্গে বৈঠক করে শহর দেখতে বেরোন। তার পর একটি ইউক্রেনীয় পরিবারের সঙ্গে আচমকা সাক্ষাৎও করেন। যুদ্ধের আবহের মধ্যে হঠাৎ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে তাঁরা হতচকিত। একটি জল রাখার জগ উপহার হিসেবে তুলে দেন বরিসের হাতে।
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, বরিসের এই যাত্রায় মূলত অস্ত্রশস্ত্র দেওয়া নিয়ে দু’দেশের কথা হয়। আরও ১০ কোটি পাউন্ডের সামরিক সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি জেলেনস্কিকে দিয়েছেন বরিস। এর মধ্যে রয়েছে, ট্যাঙ্ক ও যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী অস্ত্র এবং ড্রোন। সূত্রের খবর, ব্রিটেন ইউক্রেনকে জাহাজ ধ্বংস করতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্রও দিতে চলেছে, যাতে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার মোকাবিলায় সক্ষম হয় তারা। এ ছাড়া সাঁজোয়া গাড়িও দেওয়ার কথা হয়েছে দু’জনের মধ্যে।
এ দিকে পুতিনের রাশিয়াও আক্রমণের কৌশল বদল করছে। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভের পূর্ব প্রান্ত ধরে আট মাইল লম্বা সামরিক কনভয়। তা যাচ্ছে দক্ষিণের ভেলিকি বুরলুক হয়ে ডনবাস এলাকার দিকে।