গ্রিসের ক্রেট অঞ্চলের ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে আইল্যান্ড অব ক্রাইসি। এই ক্রাইসি দ্বীপ এক সময় মিনোয়ান সভ্যতার কেন্দ্রভূমি ছিল।
২৭০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে ১৪৫০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত মিনোয়ান সভ্যতার ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল এই অঞ্চলেই। তারপর ধীরে ধীরে এই সভ্যতার অবলুপ্তি ঘটতে থাকে।
১১০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এই মিনোয়ান সভ্যতা। মিনোয়ান সভ্যতাকেই ইউরোপের প্রথম প্রগতিশীল সভ্যতা বলা হয়।
এই মিনোয়ান সভ্যতার বিপুল সম্পদই সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ক্রাইসির মাটি খুঁড়ে তাঁরা উদ্ধার করেছেন সোনার গয়না ও প্রচুর মূল্যবান সম্পদ।
ক্রাইসির এই অঞ্চলে মিনোয়ান সভ্যতার বিশাল রত্নভাণ্ডার রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ৩৮০০ বছরের পুরনো ব্রোঞ্জ যুগের এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে খোঁড়াখুঁড়ির পর প্রত্নতাত্ত্বিকদের এই সাফল্য মিলেছে।
সোনার গয়না ছাড়াও কারুকার্য করা কাচের নানা আকারের টুকরো উদ্ধার হয়েছে। এগুলো মিনোয়ানরা ব্যবসার কাজে লাগাতেন, মনে করছেন ইতিহাসবিদরা।
গ্রিক পুরাণ মতে, রাজা মিনোস-এর থেকে এই সভ্যতার নামকরণ করা হয়েছে। ২০ শতকে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আর্থার ইভান্স এই সভ্যতা আবিষ্কার করেন।
মিনোয়ান সভ্যতার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর পাঁচতলা বাড়ির সমান উচ্চতার প্রাসাদ। সেই যুগে পানীয় জলের উন্নত ব্যবস্থাও ইতিহাসবিদদের নজর কেড়েছে।
ক্রেট, এজিয়ান এবং ভুমধ্যসাগরের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে ব্যবসার ক্ষেত্রে মিনোয়ান সভ্যতার ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল।
ব্যবসা সূত্রে মিশরের সঙ্গেও এই সভ্যতার যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন ইতিহাসবিদরা। মাটি খুঁড়ে যে কারুকার্য করা কাচের টুকরো উদ্ধার হয়েছে, তার অনেকগুলো মিশরীয় সভ্যতার। তা থেকেই তাঁদের অনুমান, মিশরেও এই সভ্যতার বিস্তার ঘটেছিল।
রত্নভাণ্ডারের খোঁজে ওই এলাকায় খননকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তাঁদের বিশ্বাস, নতুন নতুন আবিষ্কারে চমকে দেবে এই প্রাচীন সভ্যতা, খুলে যাবে ইতিহাসের বহু অজানা দিক।