আফগানিস্তানের পথে পথে এ ভাবেই এখন টহল দিচ্ছে তালিবান। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
আফগান সেনাবাহিনীকে দেওয়া আমেরিকার বায়োমেট্রিক হাতিয়ার ব্যবহার করেই এ বার আফগানিস্তানের নাগরিকদের উপর কড়া নজরদারি চালানো শুরু করল তালিবান। গত ১২ বছর ধরে আমেরিকার দেওয়া অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক যন্ত্রগুলিতে যে লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিকের হাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বা তর্জনির ছাপ ও ‘আইরিস’ (চোখের মণির চার দিকের অংশ)-এর ছবি রাখা রয়েছে, সেই সূত্র ধরেই তালিবরা এ বার জেনে ফেলবে আফগান নাগরিকদের নাম-ধাম, পরিচিতি। গত দু’দশক ধরে কারা আমেরিকা ও ন্যাটো জোট, আফগান সেনাবাহিনী ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর হয়ে কাজ করতেন, খবরাখবর দিতেন বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থাকা তালিবদের সম্পর্কে, তালিবানের আল ইশা ইউনিট এ বার সেই সব তথ্য খুঁজে বার করবে। এ ব্যাপারে তাদের সাহায্য করবে পাকিস্তান।
আফগান সংবাদমাধ্যম ‘জেঙ্গের নিউজ’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তালিবানের আল ইশা ইউনিটের অন্যতম ব্রিগে়ড কমান্ডার নওয়াজউদ্দিন হক্কানি। তিনি স্পষ্টই বলেছেন, “কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। সেই বায়োমেট্রিক ডেটাবেসের পুরোটাই আমাদের হস্তগত হয়েছে। তাই আফগানদের মধ্যে কারা আফগান ও আমেরিকার সেনাবাহিনী ও ভারতের র-এর হাতের পুতুল হয়ে উঠেছিল তা জানতে অসুবিধা হবে না। তাঁদের সকলের উপরেই কড়া নজর রাখা হবে।”
বায়োমেট্রিক যন্ত্রের ব্যবহার। -ফাইল ছবি।
আফগান নাগরিকদের যাবতীয় বায়োমেট্রিক তথ্যাদির রেকর্ড রাখার জন্য আমেরিকার সেনাবাহিনী সাত হাজারেরও বেশি স্ক্যানার পাঠিয়েছিল আফগানিস্তানে। এগুলির মধ্যে কতগুলি আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে ফেলে রেখে গিয়েছে তার কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। তালিবানের আল ইশা ইউনিট এ বার সেই সব স্ক্যানার আর গত ১২ বছর ধরে রাখা আফগান নাগরিকদের যাবতীয় বায়োমেট্রিক তথ্যাদি ব্যবহার করবে নজরদারির জন্য।
আইরিসের ছবি তোলা হচ্ছে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে। -ফাইল ছবি।
নওয়াজউদ্দিন বলেছেন, “কাবুল দখল হয়ে গিয়েছে। এখনই নজরদারি শুরুর সেরা সময়। এক হাজার সদস্যের ব্রিগেডের বেশির ভাগ জঙ্গিই এখন বিভিন্ন মাদ্রাসায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাই আল ইশা ইউনিটেরই দায়িত্ব এখন ওই বায়োমেট্রিক তথ্যাদি খতিয়ে দেখা। খোঁজখবর নেওয়া।”