Afghanistan War

Ashraf Ghani: না পালালে পিটিয়ে মেরে ফেলত তালিবান, ঝুলিয়ে দিত ল্যাম্পপোস্টে, তবে কাবুলে ফিরবই: গনি

গনির কথায়, ‘‘ক্ষমতার লোভে কাবুলকে সিরিয়া বা ইয়েমেন হতে দেওয়া যাবে না। আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০১:৩৩
Share:

আশরফ গনি। —ফাইল চিত্র

রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়েছেন বলে ‘সাফাই’ দিয়েছিলেন। এ বার প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি জানিয়ে দিলেন, দেশে থাকলে হয় তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলত তালিবান। নইলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লার মতো পরিণতি হত তাঁর। ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিত তালিবান। তবে চাপে পড়ে সাময়িক পিঠটান দিলেও, আফগানিস্তানে ফেরার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন বলেও জানালেন দেশবাসীকে।

রবিবার তালিবানের হাতে কাবুল ছেড়ে পালানোর পর গত তিন দিনে গনির খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষমেশ বুধবার জানা যায়, তিনি সংযুক্ত আমিরশাহিতে রয়েছেন। মানবিকতার খাতিরে সপরিবার গনিকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানায় আমিরশাহি সরকার।

Advertisement

তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আফগানবাসীর উদ্দেশে ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেন গনি। ফেসবুকে ন’মিনিটের ভিডিয়োবার্তায় তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতার লোভে কাবুলকে সিরিয়া বা ইয়েমেন হতে দেওয়া যাবে না। আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ওখানে থাকলে রক্তপাত ঘটতই। হয় আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলত তালিবান। নইলে আর এক প্রেসিডেন্টকে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলতে দেখতেন আফগানবাসী।’’

গনি এবং তাঁর সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের অনুপস্থিতিতে দেশ দখল করে নিয়েছে তালিবান। সরকার গড়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতায় এগিয়ে এসেছেন দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। গনি বিরোধী আবদুল্লা আবদুল্লাও তালিবানের সঙ্গে বোঝাপড়ায় নেমেছেন।

Advertisement

কারজাই এবং আবদুল্লা, দু’জনের সঙ্গেই তিক্ত সম্পর্ক গনির। কিন্তু আফগানবাসীর স্বার্থে তাঁদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। গনির বক্তব্য, ‘‘আবদুল্লা আবদুল্লা এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মধ্যস্থতায় সরকার গঠনের এই প্রয়াসে আমার সমর্থন রয়েছে। আমি চাই এই প্রয়াস সফল হোক। আফগানিস্তানে ফিরতে নিজেও কথাবার্তা চালাচ্ছি, যাতে আফগানবাসী ন্যায়বিচার পান। সত্যিকারের ইসলামিক এবং জাতীয়তাবাদী মূল্যবোধের জয় হয়।’’

গনির উপস্থিতিতে তাঁর সরকারের উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লা সালেহ্ নিজেকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছেন। তালিবানের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতে নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। তবে গনি নিজে ক্ষমতায় ফেরার কোনও ইঙ্গিত দেননি। বরং কারজাই এবং আবদুল্লার মধ্যস্থতায় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠু ভাবে মেটে, তার উপরেই জোর দিয়েছেন।

তবে তালিবানের পুনরুত্থানে যে অনিশ্চয়তা এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার জন্য নিজের সরকারের শীর্ষ আমলা, আধিকারিক এবং আন্তর্জাতিক মহলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন গনি। জানিয়েছেন, তালিবান কাবুলে ঢুকবে না, এমন চুক্তি সেরে রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রবিবার বিকেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে খবর দেন যে প্রেসিডেন্ট ভবনের ফটক পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন তালিবান। গনির কথায়, ‘‘এটা আফগান সেনার ব্যর্থতা নয়। আমার সরকারের প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মহলের ব্যর্থতা।’’

কাবুল থেকে চপার ভর্তি নগদ টাকা নিয়ে গনি পালিয়ে গিয়েছেন বলে এর আগে রাশিয়ার তরফে দাবি করা হয়েছিল। তা-ও উড়িয়ে দিয়েছেন গনি। বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের কড়া নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে তিনি আমিরশাহিতে প্রবেশ করেছেন, সঙ্গে টাকা থাকলে তা ধরা পড়ে যেত বলে দাবি করেছেন তিনি। গনির কথায়, ‘‘আমি শুধু পরনের কয়েকটা জামাকাপড় নিয়ে এসেছি। নিজের লাইব্রেরির একটা বই পর্যন্ত আনতে পারিনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement