তালিবানের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আফগানিস্তানের বাদখশানের ফৈজাবাদের খেলার মাঠে ১১ জন চাবুক মারা হয়েছে। — ফাইল ছবি।
গত নভেম্বর থেকে আফগানিস্তানে ফের চালু হয়েছে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা। এ বার দুই মহিলা-সহ ১১ জনকে জনসমক্ষে চাবুক মারা হল। তালিবানের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, গত শুক্রবার আফগানিস্তানের বাদখশানের ফৈজাবাদের খেলার মাঠে ওই ১১ জন চাবুক মারা হয়েছে। ‘নৈতিক অপরাধ এবং ব্যভিচার’-এর দায়ে। আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খামা প্রেস এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছে।
ওই সংবাদমাধ্যম প্রশাসনের এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, উত্তর বাদাখশানের এক খেলার মাঠে ১১ জনের শাস্তি দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। ছিলেন তালিবান প্রশাসক, শিক্ষাবিদ থেকে বিশিষ্ট জনেরা।
খামা প্রেস জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে তালিবান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৬ জনকে চাবুক মারা হয়েছিল। ওই ঘটনা দক্ষিণ হেলমন্দ প্রদেশের গ্রিশক জেলার। সাম্প্রতিক কালে গোটা আফগানিস্তানে তালিবানদের নির্দেশে ২৫০ জনকে চাবুক মারা হয়েছে বিভিন্ন অভিযোগে।
তালিবান নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বিচারকদের কট্টর শরিয়া আইন কার্যকর করার নির্দেশ দেন। জানান, ইসলামের শরিয়া আইন মাথায় রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালাতে হবে। তার পরেই গত নভেম্বর থেকে আফগানিস্তানে প্রকাশ্যে শাস্তিদানের ব্যবস্থা চালু হয়। তার পর থেকে হেলমন্দ, ফারাহ্, তাখর, লোগর, কাবুল, বাদাখশান, উরুজগান, পারওয়ান, পাখতিকা, পাকতিয়া, লাগমান-সহ আরও কিছু প্রদেশে অপরাধীদের প্রকাশ্যে চাবুক মারা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বিয়ের আগে সহবাস আফগানিস্তানে নিষিদ্ধ করেছে তালিবান সরকার। জানিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের আচরণ সহ্য করা হবে না। সম্প্রতি পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার তিন যুবককে ‘ব্যভিচার’-এর অভিযোগে মোট ৩৯ বার চাবুক মারা হয়েছে। নানগারহার প্রদেশের তালিবান প্রশাসকের তরফে জানানো হয়েছে, এই তিন যুবক একটি বাড়িতে থাকেন। ‘অবৈধ যৌন সংসর্গ’ করেছেন সন্দেহে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিচারের শেষে চাবুক মারার নির্দেশ দেয় আদালত।
২০২১ সালের অগস্টে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখল করে তালিবান। তার পর সে দেশে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ হয়েছে। পর্দাপ্রথা-সহ একের পর এক পরোয়ানা জারি হয়েছে। গত নভেম্বর থেকে শরিয়া আইনও কার্যকর করা হয়েছে।