কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস। -ফাইল ছবি।
গোটা বিশ্বের সামনে তালিবান শাসনের নতুন সংস্করণ তুলে ধরতে যে মরীয়া হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান সদ্য দখল করা তালিবরা, আরও এক বার তার ইঙ্গিত মিলল। জানা গেল, কাবুল থেকে ভারত দূতাবাস গুটিয়ে নিক, চায়নি তালিবান। নিরাপত্তার আশঙ্কায় কাবুল থেকে রাষ্ট্রদূত-সহ দূতাবাসকর্মীদের তড়িঘড়ি দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাক ভারত, সেটাও তারা চায়নি। কিন্তু সেই ‘আশ্বাস’-এ ভরসা রাখতে পারেনি দিল্লি। কারণ, খবর ছিল, তালিবদের সঙ্গেই আফগানিস্তানে ঢুকেছে লস্কর-ই-তইবা, এবং লস্কর-ই-জংভি (এলইজে)-র জঙ্গিরা।
সরকারি সূত্রের খবর, সে জন্য কাতারের রাজধানী দোহা থেকে তালিবদের শীর্ষ নেতৃত্বের এক জন গোপনে বার্তা পাঠিয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও কাবুলের দূতাবাসে। সেই বার্তায় কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস ও কর্মীদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলেন শীর্ষস্তরের তালিব নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাই। দূত মারফত। কিন্তু সেই আশ্বাস খুব একটা ভরসাযোগ্য বলে মনে হয়নি ভারতের। কারণ, তত ক্ষণে ভারতের হাতে এমন গোয়েন্দা তথ্যাদি এসে পৌঁছয় যে গত রবিবার তালিবদের সঙ্গে কাবুলে ঢুকে পড়েছে পাকিস্তানের দু’টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই তইবা (এলইটি) এবং লস্কর-ই-জংভি (এলইজে)-র জঙ্গিরা। তাই সোম ও মঙ্গলবার দু’দফায় বিমানে চাপিয়ে তড়িঘড়ি ভারতে ফিরিয়ে আনা হয় রাষ্ট্রদূত-সহ কাবুল দূতাবাসের প্রায় ২০০ জন কর্মীকে।
বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, সোমবার প্রথম দফায় ৪৫ জন দূতাবাসকর্মীকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কিছু ক্ষণ আগে তালিব নেতা স্তানেকজাইয়ের পাঠানো বেশ কয়েকটি বার্তা দূত মারফত এসে পৌঁছয় কাবুল দূতাবাস ও দিল্লির বিদেশমন্ত্রকে। সেই বার্তাগুলিতে আশ্বাস দেওয়া হয়, ভারতীয় দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত-সহ সব দূতাবাসকর্মীকে তো বটেই কাবুল-সহ আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন যে ভারতীয়রা তাঁদেরও নিরাপত্তা অটুট থাকবে। কিন্তু তত ক্ষণে ভারতের হাতে এমন গোয়েন্দা তথ্যাদি এসে পৌঁছয় যে গত রবিবার তালিবদের সঙ্গে কাবুলে ঢুকে পড়েছে পাকিস্তানের দু’টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই তইবা (এলইটি) এবং লস্কর-ই-জংভি (এলইজে)-র জঙ্গিরা। ভারত এও জানতে পারে কাবুলে দূতাবাসের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
এর পরেই স্তানেকজাইয়ের পাঠানো বার্তাগুলিকে আর ভরসাযোগ্য মনে করেননি বিদেশমন্ত্রকের কর্তারা। রবিবার কাবুলে তালিবরা ঢুকে পড়ার পরেই দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই আর দেরি না করে সোম ও মঙ্গলবার দু’দফায় কাবুল থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয় রাষ্ট্রদূত-সহ সব দূতাবাসকর্মীকে।