মোল্লা আব্দুল গনি বারদর। ছবি: সংগৃহীত।
কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসে প্রবল সঙ্ঘাত হয়েছিল। আফগানিস্তানে নয়া অন্তর্বর্তী তালিবান সরকার ঘোষণার পরে। তালিবান নেতাদেরই অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানাচ্ছে, চলতি মাসের গোড়ায় কাবুলে প্রেসিডেন্ট ভবনের তালিবানের গোষ্ঠী সঙ্ঘাতের সঙ্গে মোল্লা আব্দুল গনি বারদরের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ‘সম্পর্ক’ থাকতে পারে। তালিবানের গোষ্ঠী সংঘর্ষে বরাদর নিহত হয়েছেন বলে গত সপ্তাহে ‘খবর’ ছড়িয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার তালিবান একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে দাবি করেছে, বরাদর বেঁচেই আছেন। যদিও সেই দাবির সত্যতা নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে কাবুলের গোষ্ঠী সঙ্ঘাতের খবর বরাদরের অনুপস্থিতি সম্পর্কে নতুন জল্পনা উস্কে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
কাবুল দখলের পরেই তালিবানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বরাদরের সঙ্গে পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট হক্কানি নেটওয়ার্কের দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। নয়া সরকারে ক্ষমতার ভাগাভাগির জেরে হক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষেই বরদর নিহত হন বলে ‘খবর’ ছড়ায়। প্রেসিডেন্ট ভবনে উপস্থিত এক তালিবান কমান্ডার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ঘটনার দিন বরদরের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছিল হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হক্কানির কাকা খলিল-উর রহমান হক্কানির। তার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় প্রেসিডেন্ট ভবনে।
প্রসঙ্গত, নয়া তালিবান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ পেয়েছেন সিরাজুদ্দিন। খলিল পেয়েছেন উদ্বাস্তু বিষয়ক মন্ত্রক। তাঁদের দু’জনের নামই রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘জঙ্গি’ তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রচার মন্ত্রী হয়েছেন নাজবুল্লা হক্কানি, যিনি ২০০১ সাল থেকে তালিকাভুক্ত জঙ্গি। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে শেখ আবিদুল বাকি হক্কানিকে, যাঁর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
অন্যদিকে, তালিবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান বরাদরের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা বেশি। কাতারের দোহায় তালিবানের শান্তি আলোচনায় ধারাবাহিক ভাবে অংশ নিয়েছেন তিনি। ২০২০ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম তালিবান নেতা হিসেবে কথা বলেছিলেন বরাদর।
তালিবানের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে দাবি, বরাদর সম্প্রতি কন্দহরে গিয়ে তালিবদের শীর্ষ নেতা মহম্মদ হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদার সঙ্গে দেখা করেছেন। জানিয়েছেন, আপাতত তিনি কিছু দিন বিশ্রাম চান।