মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তানে সরকার গড়লেও তালিবানের দুই শীর্ষ নেতাকে গত একমাসে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গনি বরাদর সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বলে একটি খবর ছড়িয়েছিল। মঙ্গলবার তালিবান একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে দাবি করেছে, বরাদর বেঁচেই আছেন।
অডিয়ো বার্তাটি টুইটারে পোস্ট করেছেন তালিবান মুখপাত্র। তাতে যে কণ্ঠস্বরটি শোনা যাচ্ছে সেটি তালিব নেতা বরাদরেরই বলে দাবি করেছেন তিনি। অডিয়োবার্তায় ওই কণ্ঠে শোনা যায়, তিনিই তালিবান নেতা বরাদর। তাঁর মৃত্যু নিয়ে যে গুজব ছড়িয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। যদিও অডিয়ো বার্তাটির কণ্ঠস্বর সত্যিই বরাদরের কি না তা যাচাই করা যায়নি।
তালিবান আফগানিস্তানে সরকার গঠন করার পর বরাদরের নাম দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও সেই ঘোষণার পর একবারের জন্যও জনসমক্ষে দেখা যায়নি বরাদরকে। এমনকি গত রবিবার যখন আফগানিস্তানের নতুন সরকারের প্রতিনিধিরা কাতারের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কাবুলে দেখা করেন, সেখানেও বরাদর উপস্থিত ছিলেন না। এমন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তালিবানের যাবতীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া বরাদরের অনুপস্থিতি অনেকেরই নজরে পড়েছিল। বরাদরের মৃত্যু নিয়ে জল্পনাও তারপরই বেশি করে শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, জঙ্গিগোষ্ঠী হক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বরাদর। পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকার এই সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বরাবরই বিবাদের সম্পর্ক বরাদরের। বিশেষজ্ঞদের অনুমান সেই বিবাদ থেকেই সংঘর্ষ এবং বরাদরের মৃত্যু। যদিও তালিবান বার বার এই গুজব উড়িয়ে দিয়েছে।
তবে তালিবানের বক্তব্যকে এখনই সত্যি মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারা জানিয়েছে, বরাদরের মতোই গত এক মাসে দেখা মেলেনি তালিবদের শীর্ষ নেতা মহম্মদ হাইবাতুল্লা আখুন্দজাদার। অথচ তাকে তালিব শাসিত সরকারের প্রধান বলে ঘোষণা করেছে তালিবান। আখুন্দজাদা বেঁচে আছেন কি না প্রশ্ন তোলা হলে তারও একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে মৃত্যুর দাবি খারিজ করে তালিবান। তবে এমন তারা প্রথম করছে তা নয়। এর আগে তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ ওমরের মৃত্যুর সংবাদ গোপন করেছিল তালিবান। ওমরের মৃত্যুর খবর দু’বছর পর ২০১৫ সালে জানিয়েছিল তারা।