নেটমাধ্যম ব্যবহারে দক্ষ হয়েছে নয়া তালিবান। ছবি: সংগৃহীত।
পুরনো রণনীতি বদলে এ বার সাঁড়াশি আগ্রাসনে কাবুল দখলে সাফল্য পেয়েছে তালিবান। পাশাপাশি, সাফল্য এসেছে নেটমাধ্যমকে হাতিয়ার করার কৌশলেও। আফগানদের সমর্থন আদায় করতে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের ভাবমূর্তি তৈরির উদ্দেশ্যে এ বার ধারাবাহিক ভাবে নেটমাধ্যমের ব্যবহার রপ্ত করেছেন হিবাতুল্লা আখুন্দজাদার অনুগামীরা। আড়াই দশক আগে মোল্লা মহম্মদ ওমরের বাহিনীর কাছে যা ‘অচ্ছুত’ ছিল।
নব্বই দশকের শেষ পর্বে কাবুল দখলের সময় দক্ষিণে কন্দহর, লস্করগাহ, গজনির পথে এগিয়েছিল তালিব যোদ্ধারা। এ বার পুরনো সেই পথের পাশাপাশি পশ্চিমের হেরাট-মুখী পথেও অভিযান চালিয়েছে তারা। ‘অজেয়’ পঞ্জশির দখলে আনার ক্ষেত্রেও কাজে দিয়েছে তাদের সেই বহুমুখী হামলার যুদ্ধকৌশল। পাশাপাশি, নেটমাধ্যমে প্রচারেও দক্ষতা অর্জন করেছে তারা। মে মাসের গোড়ায় আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর্ব শুরু হবার পরেই তালিবান ফলাও করে নেটমাধ্যমে তাদের বিজয়ের প্রচার শুরু করে। পাশাপাশি, টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এমনকি, ইউটিউবেও ফলাও করে প্রচার করা হয় প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সরকারের ব্যর্থতার কথা।
আফগান সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে এ বার নানা হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করেছে তালিবান। বিভিন্ন প্রদেশের তালিব বাহিনীর জয়ের খবর তুলে ধরে আফগানদের সমর্থন আদায়ের জন্য তারা ব্যবহার করেছিল ‘উইস্ট্যান্ডউইথতালিবান’ নামে একটি হ্যাশট্যাগ। পাশাপাশি, ‘কাবুলরেজিমক্রাইমস’ হ্যাশট্যাগে গনি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলে তালিবানের নেট-বাহিনী।
ক্যাপিটল হিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার পরে আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্টের টুইটার হ্যান্ডল সাসপেন্ড করা হয়েছিল। কিন্তু আফগানিস্তান জুড়ে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরেও নির্বিবাদে টুইট-প্রচার চালিয়ে গিয়েছে আখুন্দজাদা শিবির। এক পর্যায়ে তাদের হ্যাশট্যাগগুলি দ্রুত গতিতে ‘ট্রেন্ড’ হতে শুরু করে।
গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখলের পরেও ধারাবাহিক ভাবে নেটমাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তালিবরা। আম আফগানদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনও বিধিনিষেধ বলবৎ হয়নি। ব্যতিক্রম এ ক্ষেত্রেও! ১৯৯৬ সালে কাবুল দখলের পর টেলিভিশনের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারও নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান।