আটা বিতরণ কেন্দ্রগুলি ক্রমে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে পাকিস্তানে। ছবি: রয়টার্স।
রমজানের মাসের শুরুতেই শাহবাজ শরিফ সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে আটা বিতরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। উৎসবের মাসে কেউ যেন অভুক্ত না থাকে সে জন্য সরকারের তরফ থেকে এই পদক্ষেপ। কিন্তু এই আটা বিতরণ কেন্দ্রগুলিই ক্রমে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে পাকিস্তানে। গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি পদপিষ্টের মতো দুর্ঘটনা ঘটেছে এই কেন্দ্রগুলিতে। সেই দুর্ঘটনাগুলিতে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু।
পদপিষ্টের ঘটনায় সাম্প্রতিক যে চার জন মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলাও ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে, পূর্ব পঞ্জাবে। পঞ্জাব প্রদেশের তথ্য মন্ত্রী আমির মীর জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে দু’জনের শারীরিক অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। এ ছাড়াও বহু লোক পদপিষ্টের ঘটনায় আহত হয়েছেন। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নখবি। গত সপ্তাহে পদপিষ্টের ঘটনায় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশেও এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল।
পদপিষ্টের ঘটনা ছাড়াও বিতরণ কেন্দ্রগুলি থেকে আটার বস্তা লুট হয়ে যাওয়ার খবর আসছে। মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের কষ্টকে লাঘব করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছিল পাক সরকার। সে দেশের মূল্যবৃদ্ধির হার বর্তমানে ৩০ শতাংশের বেশি। যা কিনা গত ৫০ বছরে সর্বোচ্চ। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে চলেছে প্রতিদিন। শুধু মাত্র আটার দাম বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। পঞ্জাব প্রদেশের খাদ্য মন্ত্রী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা খরচ করে প্রায় ৫৭ লক্ষ পরিবারের হাতে আটা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানকে রাজস্ব বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে আইএমএফ। এ দিকে ভর্তুকি দেওয়া গমের পরিমাণও কমছে পাকিস্তানে। এ জন্য গম কল এবং খাদ্য দফতরের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবকেই দায়ী করা হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে করাচিতে এক কেজি আটার দাম ছিল ১৬০ টাকা। ইসলামাবাদ, পেশোয়ারে ১০ কেজি আটার ব্যাগের দাম ছিল ১,৫০০ টাকা।