ফোকলা হাসি বাচ্চা এবং বুড়োদের মুখে দেখতে ভাল লাগলেও অল্পবয়সিদের মোটেই মানায় না। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার অন্যতম হাতিয়ার দাঁত। আর যদি দাঁতই না থাকে!
তবে অসময়ে দাঁত পড়ে গেলে দুশ্চিন্তার দিন বোধহয় এ বার শেষ হতে চলেছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, সেই জায়গাতেই নতুন করে দাঁত গজিয়ে ফেলার রহস্যের সমাধান করে ফেলেছেন তাঁরা।
এমনি দাবি করছেন জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটি গ্রাজুয়েট স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক।
ইঁদুর এবং বেজির মতো স্তন্যপায়ীর উপরে গবেষণা করে তাঁরা সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
ওই সমস্ত প্রাণীর নতুন করে দাঁতও গজিয়েছে। এ বার কুকুর এবং শূকরের উপর গবেষণা চালাবেন তাঁরা।
‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামে একটি জার্নালে সম্প্রতি তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদের দাবি, শুধুমাত্র একটি জিনকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলতে পারলেই এই ‘অসাধ্য সাধন’ সম্ভব। ওই জিনটির নাম ইউএসএজি-১।
গবেষকরা প্রথমে শরীরে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক, যেগুলি দাঁতের বৃদ্ধির জন্য দায়ী সেগুলিকে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন।
সেই সমস্ত রাসায়নিকের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েই তাঁরা প্রথমে দাঁতের বৃদ্ধি ঘটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শরীরের উপর এর উল্টো প্রভাব পড়তে শুরু করে। আসলে ওই সমস্ত রাসায়নিকগুলি শরীরের অন্যান্য অংশের বৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলছিল।
গবেষকরা তাই সেই নির্দিষ্ট জিনটির খোঁজ শুরু করেন যা শুধুমাত্র এবং সরাসরি দাঁতের বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
ইউএসএজি-১ হল সেই জিন। এই জিনটি সক্রিয় থাকলে দাঁতের বৃদ্ধি বাধা পায় এবং নিষ্ক্রিয় হলে দাঁত বৃদ্ধি পায়।
ইঁদুর-সহ ওই দুই স্তন্যপায়ী প্রাণীর ইউএসএজি-১ জিন নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে গবেষকরা দেখেছেন তাদের নতুন দাঁত গজিয়েছে।
দাঁতের চিকিৎসায় যে বিপুল খরচের ভার বহন করতে হয় এ ক্ষেত্রে তা-ও অনেকটাই কমবে বলেও গবেষকদের আশা। খুব তাড়াতাড়ি মানুষের উপরও হবে গবেষণা, জানিয়েছেন গবেষকরা।