প্রার্ম স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্রধারীকে ঘিরে ধরে পাল্টা গুলি চালান পুলিশকর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
নিজেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাল রাশিয়ার এক কিশোর ছাত্র। সোমবার সকালে প্রার্ম শহরের এই ঘটনায় নিহত আট পড়ুয়া। গুলিচালনার মাঝে পড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ছ’জন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে নেমে রাশিয়ার তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ মস্কো থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে প্রার্ম স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে এক অজ্ঞাতপরিচয় কিশোর। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই তার নিশানায় ছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস চলছিল। গুলির শব্দ শুনে শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দরজার ওপারে চেয়ার দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে ফেলেন পড়ুয়ারা। তবে তাতেও আতঙ্কে কাটেনি পড়ুয়াদের। নেটমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রাণে বাঁচতে বহু পড়ুয়াই বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের দোতলার জানলা থেকে ঝাঁপ দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশকর্মীরা। আগ্নেয়াস্ত্রধারীকে ঘিরে ধরে পাল্টা গুলিও চালান তাঁরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত কমিটি-র প্রতিনিধি শ্বেতলানা পেত্রেঙ্কো সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, গুলিচালনায় অভিযুক্ত কিশোর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তবে ১৮ বছর বয়সি ওই পড়ুয়ার নাম জানা যায়নি। গ্রেফতার হওয়ার আগে গুলিতে আহতও হয়েছে সে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিচালনার ঘটনায় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। ছবি: পিটিআই।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, নেটমাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নিজের ছবি পোস্ট করেছিল ওই অভিযুক্ত। সেই পোস্টে সে লিখেছিল, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা করার কথা ভেবেছি। আমার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার সময় এসেছে।’ যদিও তদন্তকারীদের দাবি, কোনও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কারণে নয়, ঘৃণাবশতই গুলিচালনা করেছে ওই কিশোর।
এই ঘটনার নিহতদের পরিবারের প্রতি শোকজ্ঞাপন করেছে রাশিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। পাশাপাশি, রাশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিয়েও খোঁজখবর শুরু করেছেন দূতাবাস আধিকারিকেরা।