বাইডেন এবং জেলেনস্কি। ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্বে পার্ল হারবারে আমেরিকার সেনাঘাঁটিতে হামলা এবং ৯/১১ সন্ত্রাসের সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ হানাদারির তুলনা করলেন ভোলাদিমির জেলেনস্কি। বুধবার আমেরিকার কংগ্রেসে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় জো বাইডেন এবং ওয়াশিংটনের কাছে ‘সঙ্কটের মুহূর্তে বিশ্বনেতার ভূমিকা’য় অবতীর্ণ হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
পার্ল হারবারের ঘাঁটিতে জাপানি হামলার পরেই সক্রিয় ভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল আমেরিকা। দু’দশক আগে নিউ ইউর্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আল কায়দা হানা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পেন্টাগনের লড়াইকে নতুন মাত্রা দিয়েছিল।
রুশ বাহিনীর হামলায় রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার ক্যাপিটল কমপ্লেক্সে আমেরিকার আইন প্রণেতাদের কাছে জেলেনস্কির আবেদন, ‘‘আমাদের এখনই আপনাদের সাহায্যের প্রয়োজন।’’ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনার কাছে আমাদের আবেদন, শান্তি ফেরাতে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক আঘাত হানা প্রয়োজন।’’
যুদ্ধের সূচনাপর্বে জেলেনস্কি আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর কাছে রুশ হামলা ঠেকাতে ‘সামরিক সক্রিয়তা’র আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের ২২তম দিনে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শান্তি ফেরানোর উপরেই জোর দিতে চেয়েছেন তিনি। কিভ থেকে আমেরিকার কংগ্রেসে তাঁর ভার্চুয়াল বক্তৃতার পরে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকার ন্যান্সি পোলেসি বলেন, ‘‘ভোলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের গর্ব।’’
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের নিন্দা করলেও যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে চায় না আমেরিকা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বাইডেনের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে কয়েকটি কারণ। প্রথম কারণ অর্থনীতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সব চেয়ে বড় এই যুদ্ধে অংশ নিলে অতিমারিতে বিধ্বস্ত আমেরিকার অর্থনীতি আরও টাল খাবে। আমেরিকার কোনও সীমান্তও নেই ইউক্রেনের। তা ছাড়াও, আমেরিকা কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা, রাশিয়া ও আমেরিকার মতো দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র যুদ্ধে লিপ্ত হলে তার ফল আখেরে সারা বিশ্বের পক্ষেই ক্ষতিকর হবে।