ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন। ফাইল চিত্র।
রাশিয়া এখন যেমন ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে, ঠিক সে ভাবে চিনও আক্রমণ করবে তাইওয়ানকে। খুব শীঘ্রই সেই যুদ্ধ বাধতে চলেছে বলে সতর্ক করে দিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, ইউক্রেনে যেমন বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধ আটকাতে পারেনি, ঠিক তেমনই তাইওয়ানকেও বাঁচাতে ব্যর্থ হবে তারা।
বৃহস্পতিবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক সপ্তাহ সম্পূর্ণ হল। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ক্রমাগত প্রতিরোধে এখনও রাজধানী কিভের দখল নিতে পারেনি রাশিয়া। এ দিকে আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে সাহায্য না করলেও ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় দু’হাজার ৬৬৩ কোটি টাকার আর্থিক ঋণ মকুব করেছে। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করা ট্রাম্প বলেন, ‘‘শি (চিনফিং) এখন রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে মজা নিচ্ছেন আর ভাবছেন আমেরিকা কী বোকা। আমি নিশ্চিত এ সব দেখে তাইওয়ানে হামলার পরিকল্পনা একরকম পাকা করে ফেলেছে তারা।’’
চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দক্ষিণ চিন সমুদ্রের দ্বীপ তাইওয়ান নিজেদের স্বায়ত্বশাসিত রাষ্ট্র বলে দাবি করে। অন্য দিকে, চিন সরকার মনে করে তাইওয়ান চিনেরই অঙ্গ। বহু বার নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে চাইলেও তাইওয়ানের দাবি বার বার প্রতিহত করেছে চিন। তবে তাইওয়ানের স্বাধীন হওয়ার ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখা যায়নি। আসলে তাইওয়ানের নিরাপত্তার জন্য সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত খোদ আমেরিকা। ১৯৭৯ সালেই একটি আইনের মাধ্যমে তাইওয়ানকে সরাসরি আমেরিকার প্রযত্নে আনা হয়। বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সেই দায়িত্বের কথাই টেনে এনেছেন ট্রাম্প। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘ইউক্রেনে পুতিন সফল হলেই চিন হামলা চালাবে তাইওয়ানে। তখনও এমনই হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন বাইডেন।’’
ট্রাম্প অবশ্য নিশ্চিত, আজ যদি তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতেন তবে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধই হত না। প্রাক্তন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের যুক্তি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর সঙ্গে এমন করতেই পারতেন না। এর আগেও রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের বন্ধুত্ব সমালোচিত হয়েছে আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীনও ট্রাম্প এক বার পুতিনের পক্ষে কথা বলায় তাঁর সমালোচনা শুরু হয়। তার পর অবশ্য ট্রাম্প সেই ভুল আর করেননি। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে বাইডেনের অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জমেছে আমেরিকানদের মনে। ট্রাম্পের সমালোচকদের বক্তব্য ট্রাম্প সেই আবেগকেই নিজের পক্ষে কাজে লাগাতে চাইছেন। গত দু’দিন ধরেই পুতিনের পক্ষে মন্তব্য করার বদলে জেলেনস্কির প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প।