রুশ সেনার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের অন্যতম অস্ত্র পোলিশ স্বয়ংক্রিয় হাউইৎজ়ার কামান। মঙ্গলবার ডনেৎস্কে। ছবি রয়টার্স।
পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, যুদ্ধক্ষেত্রে তারা পিছু হটবে না, নববর্ষের শুরুতেই সেই সঙ্কেত দিয়েছিল রাশিয়া। এই হুঙ্কার যে ফাঁকা আওয়াজ ছিল না, এ বার সেই আভাসই মিলল। রুশ সেনার একটি সূত্রের খবর, ‘পোসেইডন’ নামে পরমাণু শক্তিচালিত একটি বিশেষ টর্পেডোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করেছে মস্কো। ইউক্রেনকে পরাস্ত করতে আরও নানা ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভার নিয়ে নতুন শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে তৈরি হচ্ছে তারা।
নববর্ষের গোড়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর বার্তায় বুঝিয়ে দেন, রাশিয়ার প্রধান প্রতিপক্ষ আসলে আমেরিকা। ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমি দুনিয়ার মদতও যে তারা ভাল চোখে দেখছে না সে আভাসও বার বার দিয়েছে মস্কো। সম্প্রতি আমেরিকা আরও এক দফা বিপুল অর্থের সামরিক সাহায্য পাঠিয়েছে কিভে। পাশাপাশি ব্রিটেন জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেন সরকারের কাছে ১৪টি শক্তিশালী চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাঙ্কার পাঠাবে। রাশিয়াও পাল্টা হুমকি দিয়েছে, সেই সমস্ত অস্ত্র আর ট্যাঙ্কার তারা জ্বালিয়ে দেবে। এই হুমকি যে শুধু কথার কথা নয়, সোমবার সেই আভাসই মিলেছে।
রুশ সেনার একটি সূত্রের খবর, ‘পোসেইডন’ নামে পরমাণু শক্তিচালিত একটি বিশেষ টর্পেডো তারা তৈরি করে ফেলেছে। রাশিয়া তথা বিশ্বের বৃহত্তম নৌ-সেনা ঘাঁটি বেলগারোডে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে সেখান থেকেই এই অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হতে পারে। পরমাণু চালিত ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপ করা হবে এই টর্পেডোটি। সেই ডুবোজাহাজ তৈরির কাজও শেষ হয়েছে।
২০১৮ সালে পুতিন ‘পোসেইডন’-এর কথা প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন। সেই থেকে মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই অত্যাধুনিক অস্ত্রটি নিয়ে। গ্রিক পুরাণে বর্ণিত সমুদ্রের দেবতা পোসেইডনের নামে নামাঙ্কিত এই অস্ত্রটিকে শুধু টর্পেডো ভাবলে অবশ্য ভুল বলা হবে। এটি আসলে ড্রোন আর টর্পেডোর মিলিত রূপ। এটি পরমাণু শক্তিচালিত একটি স্বয়ংক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র। ফলে ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপ করার পরে বহু দূর পর্যন্ত পাড়ি দিয়ে এটি নিশানায় আঘাত করতে সক্ষম। শুধু তা-ই নয়, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তেজস্ত্রিয়তা বিকিরণ করতে সক্ষম। পাশাপাশি সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হেনে সুনামির মতো জলোচ্ছ্বাস তোলারও ক্ষমতা রাখে। যার জেরে তেজস্ত্রিয়তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে।
রুবিন ডিজ়াইন বুরোর তৈরি ‘পোসেইডন’-এর খুঁটিনাটি এত দিন লোকচক্ষুর আড়ালেই রাখা হয়। পরীক্ষাগারে স্টেটাস-৬ নামেই পরিচিত ছিল সে। জানা গিয়েছে, টর্পেডোটি লম্বায় ২০ মিটার। ১৫ মেগাওয়াটের পরমাণু চালিত ইঞ্জিন রয়েছে তাতে। ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে সেটি। জলের অন্তত ১ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে নিশানায় আঘাত করতেসক্ষম সে। সংবাদ সংস্থা