রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ছবি- রয়টার্স।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলতে থাকলে তাড়াতাড়ি জেলেনস্কির দেশের অর্থনীতি ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার এমনই সাবধানবাণী আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর। একটি বিবৃতিতে আইএমএফ জানিয়েছে, এ ভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে রাশিয়া, ইউক্রেন তো বটেই, বিশ্বব্যাপী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। একই সঙ্গে, ইউক্রেনের অর্থনীতিতেও সরাসরি তার প্রভাব পড়বে। ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।
আইএমএফ জানিয়েছে, রুশ আক্রমণের ফলস্বরূপ ২০২২ সালেই ইউক্রেনের অর্থনীতির ১০ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচন ঘটতে পারে। কিন্তু এই যুদ্ধ চলতে থাকলে পরিস্থিতি হবে আরও ভয়ানক।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৯ দিন যুদ্ধের পর সোমবার চতুর্থ বার শান্তি বৈঠকে বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। সেই বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে, কিংবা আদৌ হয়েছে কি না, রাশিয়া এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে ইউক্রেন জানাচ্ছে, এই বৈঠক থেকে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি।
রবিবারই ইউক্রেনে ‘এয়ার স্ট্রাইক’ করেছে রাশিয়া। পোল্যান্ড সীমান্তে আকাশপথে রুশ হানায় প্রাণ হারান অন্তত ৩৫ জন। আহত হয়েছেন ১৩৪ জন। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদেমির জেলেনস্কির আবেদন, ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাশিয়ার জন্য আকাশ সীমানা বন্ধ করে দিক। না হলে তাদের উপরও হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। ইউক্রেন জানিয়েছে, ইতিমধ্যে রাজধানী কিভের ভিতরে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনা। এই অবস্থায় শুধু শহরের দক্ষিণ দিকের রাস্তা শুধু নাগরিক যাতায়াতের জন্য খোলা। সেখানে টহলে রয়েছে ইউক্রেনের সেনা। বাকি সমস্ত জায়গাতেও সর্বশক্তি দিয়ে রুশ হামলা প্রতিহতের চেষ্টা করছে তারা।
ইউক্রেন দাবি করেছে, জল-স্থল-অন্তরীক্ষ— তিন দিক থেকে রাশিয়ার হামলায় বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। রবিবার প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকার এক সাংবাদিকও। আহত হয়েছেন তাঁর সহকর্মী। দোকান-বাজার, স্কুল-হাসপাতালে ইচ্ছাকৃত ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করছে রাশিয়া। চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রের দখল তারা আগেই নিয়েছিল। এখন সেই পারমাণবিক কেন্দ্রটি ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ সেনা। জেলেনস্কির অভিযোগ, ইউক্রেন প্রশাসনকে সব দিক থেকে কোণঠাসা করতে নাগরিকদের উপর আক্রমণ করছে পুতিন-সেনা।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার অফিস (ওএনএইচসিএইচআর) তাদের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৩ মার্চ পর্যন্ত ইউক্রেনে ৬৩৬ জন সাধারণ নাগরিক যুদ্ধের বলি হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে ৪৬টি শিশুও।